টিকটকই ভবিষ্যৎ, মানছে ফেসবুক ও স্ন্যাপচ্যাট!
সামাজিক যোগাযোগের চেহারাকেই পুরোপুরি পালটে দিয়েছে ফেসবুক। আর বর্তমানে আমরা যে 'স্টোরি' ফরম্যাটে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছবি বা ভিডিও শেয়ার দিতে পারি, এবং পরে সেগুলো উধাও হয়ে যায়, এই ফরম্যাটের উদ্ভাবক স্ন্যাপচ্যাট। অথচ ফেসবুক ও স্ন্যাপচ্যাট, দুই কোম্পানিই ভাবছে, ভবিষ্যতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজত্ব চলবে টিকটকের।
গত বৃহস্পতিবার নিজেদের ত্রৈমাসিক উপার্জনের প্রতিবেদন দিতে গিয়ে বিনিয়োগকারীদের এক মন্তব্যের জবাবে স্ন্যাপ সিইও ইভান স্পিগেল বলেন, বর্তমানে তাদের অ্যাপ থেকে ব্যবহারকারীরা বন্ধুদের স্টোরি দেখায় খুবই কম সময় ব্যয় করছে। অথচ কোম্পানিটি ভেবেছিল, করোনাকালীন লকডাউনে ব্যবহারকারীরা ঘরেই অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পার করছে বলে তাদের স্টোরি দেখার প্রবণতা হয়তো বাড়বে।
স্পিগেল জানান, স্ন্যাপচ্যাটের ব্যবহারকারীরা বরং ভিডিও দেখার জন্য ছুটছে স্পটলাইটে। টিকটকের সঙ্গে টেক্কা দিতে স্পটলাইট নিয়ে এসেছে স্ন্যাপচ্যাট, যেখানে বিভিন্ন র্যান্ডম ক্রিয়েটরের পোস্ট করা ভাইরাল ভিডিও দেখা যায়, এবং ডিসকভার সেকশনে গিয়ে নানা প্রিমিয়াম শো-ও খুঁজে পাওয়া যায়।
"আসলে আমরা গোটা মহামারি জুড়ে যে ট্রেন্ড দেখতে পেয়েছি, এটি সেটিরই একটি চলমান রূপ। বন্ধুদের স্টোরি পোস্টিং এবং অ্যাকটিভ ইউজার প্রতি দৈনিক ভিডিও ও ছবি দেখার পরিমাণ প্রাক-মহামারি পর্যায়ে ফেরেনি," স্পিগেল বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন।
"যদিও আমরা আশাবাদী যে আমাদের কমিউনিটি কিছুদিনের মধ্যেই মহামারির আগের মতো আচরণে ফিরে যাবে। তবে আমরা আমাদের কমিউনিটিকে আরও ভালো পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নিত্যনতুন কনটেন্ট উদ্ভাবনেও মনোনিবেশ করছি।"
যদিও স্ন্যাপ সিইও সরাসরি বলেননি যে তাদের কনটেন্ট সেকশনটি পরিবর্তন আসার পর দেখতে ঠিক কী রকম হবে, তারপরও সহজেই অনুমান করা যায় যে তাদের ট্যাবটি অনেকটা টিকটকের মতোই দেখাবে।
এদিকে চলতি সপ্তাহেই ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ টিকটককে তাদের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
"কীভাবে সময় কাটানো যেতে পারে, সেটি বেছে নেওয়ার জন্য মানুষের হাতে এখন অনেক রকমের অপশন রয়েছে। টিকটকের মতো অ্যাপগুলোর খুব দ্রুত উন্নতি হচ্ছে," বুধবার মেটার চতুর্থ ত্রৈমাসিক আয় সংক্রান্ত সম্মেলনে জাকারবার্গ বলেন।
এখনও স্ন্যাপের ইউজার-বেজের আকার বেড়ে চলেছে, এবং তারা আয়ের দিক থেকে প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। কিন্তু ফেসবুকের অবস্থা সেরকম নয়। তারা সম্প্রতি যে আয়ের হিসেব দেখিয়েছে, তাতে যারপরনাই হতাশ বিনিয়োগকারীরা। একদিনের মধ্যেই তাদের বাজারদর পড়ে গেছে ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর আগে ফেসবুকের একদিনে সর্বোচ্চ বাজারদর পতনের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০১৮ সালে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, স্ন্যাপচ্যাট ও ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের শীর্ষস্থানীয় মাধ্যমগুলো তাদের ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স তুলে ধরার পাশাপাশি টিকটককে দেখছে তাদের প্রতিযোগী হিসেবে। তাদের মতে, টিকটকই ভবিষ্যৎ। ফলে টিকটকের নাম শুনে নাক সিঁটকানোর দিন বোধহয় খুব শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে!
- সূত্র: দ্য ভার্জ