প্রথম দেশ হিসেবে কোভিড টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ করল ডেনমার্ক
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কোভিড টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত করেছে ডেনমার্ক। উচ্চ হারে টিকা প্রদান, নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাস এবং হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত রোগী ভর্তির স্থিতিশীলতার হারকে এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি।
এই সিদ্ধান্তের অর্থ, ১৫ মে-র পরে দেশটিতে আর টিকা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না। তবে ডেনমার্কের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশা করছেন যে, গ্রীষ্মের পর টিকা কার্যক্রম আবার শুরু করা হবে।
ডেনমার্কের প্রধান চিকিত্সক, বোলেট সোবোর্গ বলেন, "আমরা শরৎকালে টিকাদান কার্যক্রম পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছি। এর আগে কাকে, কখন টিকা দিতে হবে এবং কোন টিকা দিতে হবে তার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবেচনা করা হবে"।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ইউরোপীয় জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক মার্টিন ম্যাকি বলেন, "এটা স্পষ্ট যে ডেনমার্ক টিকাদান বন্ধ করছে না। যারা তাদের কোর্স শেষ করতে পারেনি, তারা এখনও টিকা পাবেন। এছাড়া গ্রীষ্মকালে একটি বিরতি হিসাবে দেখা হচ্ছে। আশা করি এটি শরত্কালে আবার শুরু হবে"।
এই পদক্ষেপের আরেকটি অর্থ হচ্ছে, ডেনমার্কের নাগরিকদের বার এবং রেস্তোঁরাগুলোর জন্য কোভিড পাস সহ অভ্যন্তরীণ কোনো স্থানে মাস্ক পরতে হবে না। এখন করোনা পরীক্ষায় কারোর পজিটিভ আসলেও তাকে আর কোয়ারেন্টাইনে যাবার প্রয়োজন নেই।
প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন ফেব্রুয়ারিতে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "ডেনমার্কে মহামারী এখনও রয়েছে। আমরা যা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, আমরা সংকটপূর্ন পর্যায়ে রয়েছি"।
বার্তা সংস্থা এপি'র বরাত দিয়ে বলা হয়, ফ্রেডেরিকসেন একটি ড্যানিশ রেডিওকে বলেন, "আমি বলছি না যে টিকা স্থগিত করার মাধ্যমে করোনার বিধি-নিষেধ একেবারে থাকবে না। আমরা জানি না আগামি শরতে কী ঘটবে অথবা একটি নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট আসবে কিনা"।
নিউইয়র্ক টাইমসের কোভিড ট্র্যাকার অনুসারে, ডেনমার্কের বর্তমান জনসংখ্যার ৮২ শতাংশকে সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ কোভিড টিকার অন্তত একটি বুস্টার ডোজ পেয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দেশটির ৬৬ শতাংশ জনগণকে সম্পূর্ণভাবে টিকা দিয়েছে এবং মাত্র ৩০ শতাংশ একটি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছে।
বর্তমানে ডেনমার্কে প্রতিদিন গড়ে ১৫৫০ জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছে। যদিও গত ১৪ দিনে ৩৭ শতাংশ সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ১৩.৯ জন মৃত্যুবরণ করছে। অর্থাৎ, প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ২.৩ জন মৃত্যুবরণ করছে।
ম্যাকি সতর্ক করে বলেন, "অবশ্যই দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন সাবলাইনেজের লক্ষণগুলির ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। একইসাথে নতুন ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে বিস্তৃত কার্যকারিতার নতুন টিকারও প্রয়োজন আছে।'
- সূত্র: নিউজউইক