কথা রাখলেন মুমিনুল
ডোনাল্ট টিরিপানোর বলটি ছিল ফুল লেংথের। সিমে আঘাত করে বের হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মুমিনুল হকের সামনের পায়ের কাজে বলটি ব্যাটের ঠিক মাঝখানটা খুঁজে পেল। কভার দিয়ে বল বাউন্ডারি লাইনে যেতেও সময় লাগল না, যেখানে বসে ছিলেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। আয়েশ করে বসে থাকা অবস্থায় দুই হাত উপরে তুলে হাত তালি দিলেন প্রোটিয়া এই কোচ।
মুমিনুলও তখন সবুজ গালিজার বুকে দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে উদযাপনে ব্যস্ত। মিলে গেছে টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এই চূড়ায় মুমিনুল একাই নন, আছেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালও। দুজনই এখন টেস্টে ৯টি করে সেঞ্চুরির মালিক।
মুমিনুলের সেঞ্চুরি দেখতেই যেন ড্রেসিং রুমের ডাগ আউটে বসে ছিলেন ডমিঙ্গো। টেস্ট অধিনায়ক ১০০ ছুঁতেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান তিনি। মুমিনুলকেও খুব বেশি উচ্ছ্বসিত দেখায়নি। ১৪ ইনিংস পর তিন অঙ্কের ম্যাজিক অঙ্কে পৌঁছালেও মুমিনুল থেকে গেছেন খুব শান্ত। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বুক মেলানোর আগে কেবল একবার ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি।
যেন কথা রাখলেন মুমিনুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র এই টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বলেছিলেন, দুর্দশা কাটিয়ে উঠবেন দলের ব্যাটসম্যানরা। বলেছিলেন, '১০০, ২০০, ৩০০ রানও করতে পারে আমাদের দলের কেউ।' এ পথে নেতৃত্ব দিলেন তিনিই। এটাকে এবার নিশ্চয়ই ২০০ তে নিয়ে যেতে চাইবেন মুমিনুল।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের নভেম্বরে সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল। এরপর ১৪টি ইনিংস কেটেছে চরম অস্বস্তিতে। কখনও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা পর্যন্ত তৈরি করতে পারেননি তিনি। ১৪ ইনিংসের মধ্যে একটি মাত্র হাফ সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ৫২ রানের। অচেনা এক পথেই হাঁটছিলেন তিনি। এবার সেই পথের মোড় ঘুরিয়ে আলোর পথে ফিরলেন টেস্ট অধিনায়ক।
সেঞ্চুরি সব সময়ই ব্যাটসম্যানদের কাছে স্পেশাল। এই সেঞ্চুরিটি মুমিনুলের কাছে আরও বেশি স্পেশাল হওয়ার কথা। খারাপ সময়কে বিদায় জানানোর সেঞ্চুটির এটা। এরচেয়েও বড় মাহাত্ম্য আছে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরিটি করলেন তিনি। ১৫৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মুমিনুল ১০৬ রানে ব্যাটিং করছেন। মুশফিক অপরাজিত আছেন ৭৬ রানে।
টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে সবাইকে ধন্ধেই ফেলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। চিরচেনা ৬৮ নম্বর বাদ দিয়ে জার্সির পেছনে ০৭ নম্বর নিয়ে মাঠে নামেন তিনি। সৌভাগ্যের নম্বর নিয়ে মাঠে নামার ম্যাচে বদলালো তার ভাগ্য, বাংলাদেশও যেন খুঁজে পেল লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার পাথেয়!