তিন আলীতে মুশফিকের মুখে হাসি
ইয়াসির আলী, আকবর আলী এরপর মুক্তার আলী। ব্যাট হাতে ইয়াসির, আকবরদের তাণ্ডবের পর বল হাতে মুক্তারের ৪ উইকেট। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে ব্যবধানটা এখানেই গড়ে ফেলে বেক্সিমকো ঢাকা। ফলটাও মুশফিকুর রহিমের দলের পক্ষেই গেছে। তিন আলীর দারুণ পারফরম্যান্সে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে রাজশাহীকে ২৫ রানে হারিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা।
টানা তিন হারের পর জয়ের মুখ দেখা ঢাকা পরের ম্যাচে আরও দাপুটে লড়াই করলো। ৫ ম্যাচে মুশফিকদের ঝুলিতে জমা হলো ২টি জয়। রাজশাহীর ক্ষেত্রে পুরো উল্টোটা হয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচে জয় পাওয়া রাজশাহী পরের তিন ম্যাচেই হার মানলো।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে বেক্সিমকো ঢাকা। শুরুটা ভালো না হলেও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে চাপ কাটিয়ে ওঠে ঢাকার। এরপর ম্যাচসেরা ইয়াসির আলী রাব্বি ও আকবর আলীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান তোলে বেক্সিমকো ঢাকা।
জবাবে শুরুটা এলোমেলো হলেও রনি তালকুদার ও ফজলে মাহমুদ রাব্বির ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখেছে রাজশাহী। শেষের দিকে কয়েক বলের লড়াইয়ে আশা জাগিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান, ফরহাদ রেজারাও। কিন্তু কোনো লড়াই-ই কাজে আসেনি। ১৯.১ ওভারে ১৫০ রানে অল আউট হয় নাজমুল হোসেন শান্ত দল।
১৭৬ রানের বড় লক্ষ্য, শুরু থেকেই দ্রুত রান তোলার তাড়া ছিল রাজশাহীর। কিন্তু দ্রুত রান তো আসেইনি, উল্টো ধীর শুরুর পর উইকেটও হারায় দলটি। দলীয় ৭ রানে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের ওভারে বিদায় নেন আনিসুল হক ইমনও। দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে আরও বিপদে ফেলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। দলীয় ১৫ রানে আউট হন তিনি।
এমন শুরুর পরও অবশ্য রাজশাহীকে ছন্দে ফেরান রনি তালুকদার ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি। চতুর্থ উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তারা। দুজনই মারকাটারি ধরনে ব্যাটিং করেন। রনি ২৪ বলে একটি চার ৩টি ছক্কায় ৪০ রান করেন। ফজলে রাব্বি ৪০ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন।
এই দুই ব্যাটসম্যান ফেরার পর রাজশাহীর স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসে। যদিও শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান, ফরহাদ রেজারা ছক্কা মেরে আশা জিইয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলকে হাসাতে পারেননি তারা। সোহান ৯ বলে ১১ ও ফরহাদ রেজা ৪ বলে ২ ছক্কায় ১৪ রান করেন। ঢাকার মুক্তার আলী ৪টি, শফিকুল ইসলাম ৩টি ও রুবেল হোসেন একটি উইকেট নেন।
এরআগে ব্যাটিং করা ঢাকা আবারও উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন আনে। তানজিদ হাসান তামিমকে সরিয়ে রবিউল ইসলাম রবিকে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠানো দলটি এই ম্যাচে নাঈম হাসানকে ওপেনার হিসেবে বেছে নেয়। এতেও সাফল্য মেলেনি। শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। দলীয় ৩ রানেই বিদায় নেন নাঈম।
নাঈম শেখকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এই জুটিতে ৩৯ রান পায় ঢাকা। মুশফিক মারকুটে মেজাজে ব্যাট চালালেও নাঈম ছন্দ খুঁজে পাননি। ৯ রান করে আউট হন বাঁহাতি এই ওপেনার। কিছুক্ষণ পর সাজঘরে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিমও। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৭ রান করেন মুশফিক।
এরপর ঢাকার বাকিটা ইনিংসজুড়ে দুজনের নাম, ইয়াসির আলী রাব্বি ও আকবর আলী। দ্রুতই উইকেটে মানিয়ে নিয়ে রাজশাহীর বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ১০০ রানের জুটি গড়েন তারা। এদের ব্যাটিংয়ে শেষ তিন ওভারে ৪৯ রান পায় ঢাকা। খুনে ব্যাটিং করা ইয়াসির ৩৯ বলে ৯টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৭ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন।
আকবর ছিলেন আরও বিধ্বংসী ভূমিকায়। বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক ২৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন। রাজশাহীর পেসার মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ২টি এবং মাহেদী হাসান, আরাফাত সানি ও ফরহাদ রেজা একটি করে উইকেট নেন।