মুশফিক-তামিমদের বাসায় গিয়ে করোনা পরীক্ষা করবে বিসিবি
করোনাভাইরাসের প্রকোপ পুরোপুরি না থামলেও দলীয় অনুশীলন শুরুর পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যদিও সহসাই শুরু হচ্ছে না অনুশীলন। আপাতত একক অনুশীলনই চালিয়ে যাবেন ক্রিকেটাররা। আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরের আগে কয়েকদিন দলীয় অনুশীলন করবেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে জাতীয় দল। এরআগে ১০-১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০-২২ সদস্যের দল ঘোষণা করা হবে। দলে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের তিন দফায় করোনা পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষা শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। সব ক্রিকেটারের বাসায় গিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান আকরাম খান।
করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া ক্রিকেটারদের ২০ সেপ্টেম্বর হোটেলে তোলা হবে বলে জানান বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। হোটেলে থেকেই কয়েকদিন দলীয় অনুশীলনে অংশ নেবেন ক্রিকেটাররা। দুই-তিন অনুশীলনের পর ২৩ অথবা ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে জাতীয় দল ও হাই পারফরম্যান্স দলের (এইচপি) রওনা দেওয়ার কথা।
মঙ্গলবার বিসিবিতে এক বৈঠকের পর আকরাম খান বলেন, 'আমি আগে যেভাবে বলেছি, সেরকমই আছে। তবে আজ কিছু জিনিসে পরিবর্তন হয়েছে, দুই চারদিন এদিক সেদিক হচ্ছে। ১৮ সেপ্টেম্বর আমরা সবার বাসায় গিয়ে কোভিড টেস্ট করব। এরপর ২০ তারিখের দিকে হোটেলে ওঠার চিন্তা-ভাবনা করেছি। ২১ তারিখ থেকে কিছুদিন অনুশীলন করে আমরা শ্রীলঙ্কা যাব।'
বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে ক্রিকেটারদের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান আকরাম খান। তিনি বলেন, 'দল আমরা ১০-১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দিয়ে দিব। কারণ সংখ্যাটা আমরা বাড়াব, ২০-২২ জন হবে। কোভিড যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা নয়। অনেক ঝুঁকি আছে, আমাদের অনেক বিকল্প রাখতে হবে।'
শ্রীলঙ্কা সফর নিশ্চিত হয়ে গেলেও কোয়ারেন্টিনসহ আরও কিছু বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আকরাম খান বলেন, 'এটা অনেক বড় সফর। কতদিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। কোচরা এসে আবার এখানে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন, এরপর অনুশীলন শুরু হবে। সবকিছু মিলিয়ে কঠিন। তারপরও আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি, যেন কোনো ঝামেলায় না পড়ি।'
সর্বশেষ দলে থাকা ক্রিকেটারদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন কয়েকজনকে দলে রাখা হবে 'অপশন' হিসেবে। কারণ নিয়মিত কোনো ক্রিকেটার করোনা আক্রান্ত হলে তার বিকল্প প্রস্তুত রাখতে হবে। এ কারণেই ২০-২২ সদস্যের দল দেওয়া হবে।
আকরাম খান বলেন, 'যেটা বললাম সংখ্যাটা বাড়াব, স্কোয়াডটা বড় হবে। এর মধ্যে সবশেষ যারা খেলেছে তারা তো থাকবেই। এ ছাড়া আমরা তিন-চারটা অনুশীলন ম্যাচ খেলব, সেখান থেকেও বাছাইয়ের সুযোগ থাকবে। শ্রীলঙ্কায় অনুশীলন ম্যাচ খেলব ৩-৪ টা। সেখানেও নির্বাচকদের অপশন থাকবে। কিছু করার নেই, যেহেতু সবশেষ ৫-৬ মাস কোনো খেলা ছিল না।'
পুরোপুরি নিশ্চিত হতে তিন দফায় ক্রিকেটারদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। এরআগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে আসবেন দলের কোচিং স্টাফরা। ঢাকা ফিরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন ডমিঙ্গে-ভেট্টরিরা। এরপর ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাদেরও করোনা পরীক্ষা করা হবে সফরের আগে। শ্রীলঙ্কা গিয়েও করোনা পরীক্ষায় পাস করতে হবে জাতীয় দলকে।
আকরাম খান বলেন, 'কোচিং স্টাফরা আগামী মাসের প্রথম দিকে এসে পড়বে। কোয়ারেন্টিনে থাকার পরই তারা মাঠে এসে অনুশীলন করাতে পারবে। কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে এবং বারবার টেস্ট হবে। ১৮, ২১ এবং যাওয়ার আগে আরেকবার টেস্ট করব। সেখানে গিয়েও টেস্ট হবে। যতটুকু শুনলাম শ্রীলঙ্কা বোর্ডও ঘন ঘন টেস্ট করাবে। এরপরও কেউ আক্রান্ত হলে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এসব নিয়েই চিকিৎসকদের সাথে আলোচনা হচ্ছে।'
এই সফরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি তিনটি ওয়ানডে নাকি টি-টোয়েন্টি থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা ছিল। বিসিবির ইচ্ছা ছিল টি-টোয়েন্টি খেলার। কিন্তু বিসিবির প্রস্তাবে রাজি হয়নি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট, 'এটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। আমরা অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা বলছে তাদের এসএলপিএল আছে।'
স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় কলম্বোতে সিরিজ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আকরাম খান। যদিও এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আকরাম খান বলেন, 'সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে কলম্বোতেই হবে মনে হয়। এখন অবশ্য চুড়ান্ত কিছু জানায়নি, হয়তো কলম্বোতেই হবে। হাসপাতাল, উন্নত চিকিৎসা এসব সুযো-সুবিধা ভালো ওখানে।'