লিটনের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ
লিটনের চোখ জুড়িয়ে দেওয়া সেঞ্চুরি, সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনদের মাঝারি কয়েকটি ইনিংস। তাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের শাসনের ছবি পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠল। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩২১ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ছিল ৩২০ রানের। ২০০৯ সালে বুলাওয়েতে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি করার সেই ম্যাচটি ৪৯ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
সর্বোচ্চ রানের ইনিংস গড়ার দিনেও কোথাও যেন আফসোস থেকে গেল। এই আফসোসটা সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাসের জন্য। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ইনিংস শেষ না করেই মাঠ ছাড়তে হয়। ব্যক্তিগত ১২৬ রানের মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। দারুণ ছন্দে ব্যাটিং করতে থাকা লিটন আরও কিছুটা সময় উইকেটে থাকতে পারলে বাংলাদেশের সংগ্রহ আরও বড় হতেই পারত।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মন্দ হয়নি। উদ্বোধনী জুটিতে ৬০ রান যোগ করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তামিম একটু বেশিই ঠাণ্ডা মেজাজে ছিলেন। তবে লিটন খেলতে থাকেন নিজের চেনা ছন্দে।
মূলত লিটনের ব্যাটেই বাংলাদেশের রানচাকা ঘুরতে থাকে। তামিম ছিলেন অতি সাবধানী। খুব একটা সাবলীলও মনে হয়নি তাকে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই ওপেনার ২৮ বলে গিয়ে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান। এতটা সতর্ক থেকেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তামিম। ৪৩ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন তিনি।
নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে যেন নতুন শুরু করেন লিটন। এই জুটি থেকে ১২০ রান পায় বাংলাদেশ। এর মাঝে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। শান্তও হাঁটছিলেন একই পথে। কিন্তু আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হয়ে ২৯ রানেই ফিরতে হয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে।
আম্পায়ার আউট দিলেও টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ডেলিভারিটি স্টাম্পের বাইরে ছিল। রিভিউ না থাকায় মাঠ ছাড়তে হয় শান্তকে। মুশফিকুর রহিম সুবিধা করতে পারেননি। ১৯ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
মুশফিক উইকেটে থাকা অবস্থায়ই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। ১০০ ছুঁতে লিটন বল খরচা করেছেন ৯৫টি। চোখ জুড়িয়ে দেওয়া এই ইনিংসে ১০টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। ৩৪ ওভারে বাংলাদেশ তখন ১৮২ রানে পৌঁছে গেছে। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেট যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এই জুটিতে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎ-ই তাতে বাধা পড়ে। ব্যক্তিগত ১২৬ রানের সময় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন। শেষের দিকে রান বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটি করেছেন মাহমুদউল্লাহ, মিঠুন ও সাইফউদ্দিনরা।
মাহমুদউল্লাহ ৩২ রান করে আউট হলেও মিঠুন তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি। ৪১ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫০ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে দলে ফেরা সাইফউদ্দিন ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। ১৫ বলে ৩টি ছক্কায় হার না মানা ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ের ডানহাতি পেসার ক্রিস এমপফু সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন।