এবার লড়াকু পূঁজিও গড়তে পারলো না বাংলাদেশ
যে ফরম্যাট নিয়ে গর্ব, যেকোনো প্রতিপক্ষকে লড়াই জানায় বাংলাদেশ; সেই ওয়ানডেতেও দলটির এখন করুণ দশা। সেটাও কিনা অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। প্রথম দুই ওয়ানডেতে হারলেও সংগ্রহ মন্দ ছিল না। ম্যাচ হারতে হয়েছিল গড়পড়তা বোলিং ও বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে। এবার সংগ্রহটাও লড়াকু হলো না তামিম ইকবালের দলের।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৫৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এমন ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে এই সংগ্রহ যে লড়াকু পূঁজি নয়, সেটা ভালো করে জানা আছে তামিমদের। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকেই ধারাভাষ্যকাররা বলে যাচ্ছিলেন, 'ব্যাটিং করার জন্য দারুণ উইকেট।' কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে ঠিক উল্টোটা।
এই সংগ্রহই বাংলাদেশের কাছে অবশ্য বেশি মনে হতে পারে। কারণ দিক হারানো বাংলাদেশের ইনিংস আরও আগে শেষ হতে পারতো। আফিফ হোসেনের লড়াইয়ের কারণে তা হয়নি। বাঁহাতি তরুণ এই ব্যাটসম্যান এক পাশ আগলে শেষ পর্যন্ত রান তোলার কাজটি করে গেছেন। তার আগে কেবল এনামুল হক বিজয় দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন।
মাহমুদউল্লাহ রান পেলেও প্রচন্ড ধীরগতির ব্যাটিং করেন। এই ইনিংসে বাংলাদেশের পাঁচজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেছেন, শূন্য রানে আউট হন চার জন। প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৩ ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৯০ রান তুলেও হার মানতে হয় বাংলাদেশকে। সেখানে ২৫৬ রান তুলে কতোটা লড়াই করতে পারবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের ওপর। যদিও শেষ দুই ম্যাচের বোলিং-ফিল্ডিংয়ের পর অস্বস্তিতেই পড়ে যাওয়া কথা তামিম-মুশফিকদের।
দারুণ ব্যাটিং উইকেট হলেও শুরুটা ধীরগতির হয় বাংলাদেশের। ধীরগতির শুরুর পরও অবশ্য উদ্বোধনী জুটি থেকে বেশি রান পায়নি সফরকারীরা। দলীয় ৪১ রানে বিদায় নেন তামিম। রান আউটে কাটা পড়ার আগে ৩০ বলে ৩টি চারে ১৯ রান করেন তামিম। অধিনায়ক ফিরতেই এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস।
এক ওভারেই নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমকে ফিরিয়ে দেন জিম্বাবুয়ের পেসার ব্র্যাড ইভান্স। এই দুই ব্যাটসম্যানের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। ৪৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানো দলকে পথ দেখাতে শুরু করেন বিজয় ও মাহমুদউল্লাহ। এই জুটি থেকে আসে ইনিংস সেরা ৭৭ রান। কিন্তু এ সময় বিজয় স্বাভাবিক গতিতে ব্যাট চালালেও মাহমুদউল্লাহ ছিলেন ধীরগতির।
দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা বিজয়ের বিদায়ে ভাঙে জুটি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৭১ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৬ রান করেন ডানহাতি এই ওপেনার। ওয়ানডেতে এটা তার পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি ও এই সিরিজে দ্বিতীয়। বিজয়ের বিদায়ের পর আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ।
এই জুটি থেকে ৫৭ বলে আসে ৪৯ রান। চরম দৃষ্টিকটু ব্যাটিং করা মাহমুদউল্লাহ ৩৯ বলে ৩টি চারে ৩৯ রান করে আউট হন। এরপর বাকি পথটা একাই লড়তে হয় আফিফকে। মেহেদী হাসান মিরাজ আশা জাগালেও ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া কঠিন চাপের মাঝেও আফিফ ৮১ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন।
তাইজুল ইসলাম রান আউটে কাটা পড়ার আগে করেন ৫ রান। হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান রানের খাতা খুলতে পারেননি। অভিষিক্ত এবাদত হোসেন উইকেটে গেলেও কোনো বল মোকাবিলা করার সুযোগ পাননি। জিম্বাবুয়ের ব্র্যাড ইভান ও লুক জংওয়ে ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান রিচার্ড এনগারাভা ও সিকান্দার রাজা।