টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিব অধিনায়ক
মাস দুয়েক আগেই টেস্টের অধিনায়কত্ব পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। এবার আরও এক ফরম্যাটে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের ওপর ভরসা রাখলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাকিবকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপ দিয়ে অধিনায়ক সাকিবের মিশন শুরু হবে। এরপর নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নেতৃত্বে থাকবেন তিনি।
শনিবার গুলশানে নিজের বাসভবনে সাকিবসহ বিসিবির কয়েকজন পরিচালক ও নির্বাচকদের নিয়ে সভায় বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। অনলাইনে যোগ দেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। যদিও এই সভার আগেই সাকিবকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় বিসিবি। দল গঠনে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের মতামত ও বেটউইনারের সঙ্গে তার চুক্তির ব্যাপারে ব্যাখ্যা জানতে তাকে সভায় ডাকা হয়। এই সভা শেষে অধিনায়কের পাশাপাশি এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করা হয়।
টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বের আলোচনায় সাকিব, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহানের নাম ছিল। তবে নেতা হিসেবে সাকিবকেই পছন্দ ছিল বিসিবির। কিন্তু অনলাইন বেটিং সাইট বেটউইনারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের শুভেচ্ছতাদূত হওয়ায় সাকিবের নাম ঘোষণা করতে পারছিল না বিসিবি। বিসিবির কড়া হুঁশিয়ারির পর চুক্তি বাতিল করেন সাকিব। এর দুদিন পর তাকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হলো।
সাকিবের চুক্তির ব্যাপারটি ছাড়াও কয়েকজন ক্রিকেটারের চোট নিয়ে বিপাকে ছিল বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। দল গড়াই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় নির্বাচকদের জন্য। তাই এশিয়া কাপের আয়োজকদের কাছ থেকে তিন দিন বাড়তি সময় নেয় বিসিবি। এর মধ্যে সাকিবের চুক্তির বিষয়টিও সমাধান হয়ে যায়।
সাকিবকে অধিনায়ক করার বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, 'এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ড ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবকে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করছি। এর পরের ব্যাপারটা পরবর্তীতে দেখা যাবে। আগে থেকেই সাকিবকে অধিনায়ক করার পরিকল্পনা ছিল আমাদের।'
জিম্বাবুয়ে সফরের আগে মাহমুদউল্লাহকে সরিয়ে সোহানকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা হয়। তখন বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোহান চোট পাওয়ায় দলে নেওয়া হয় তাকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহকে খেলানোও হয়, তবে তাকে অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়নি। নেতৃত্ব পান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এবার সাকিবকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক করায় বুঝতে বাকি রইলো না, মাহমুদউল্লাহকে তখন বিশ্রাম নয়, বাদ দেওয়া হয়েছিল।
টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও তৃতীয় দফায় নেতৃত্ব পেলেন সাকিব। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব পান তিনি। দুই বছর পর নেতৃত্ব পালনের পর অধিনায়কত্ব থেকে (২০১১ সালে) সরিয়ে দেওয়া হয় অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে। ২০১৭ সালে এসে নেতৃত্বে ফেরানো হয় সাকিবকে। জুয়াড়িদের প্রস্তাব লুকানোয় ২০১৯ সালে সাকিব এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলে মাহমুদউল্লাকে অধিনায়ক করে বিসিবি।
সেই মাহমুদউল্লাহকে সরিয়ে আবারও সাকিবের হাতে তুলে দেওয় হলো নেতৃত্বভার। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশকে ২১টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৭টি ম্যাচে, বাকি ১৪ ম্যাচে হার। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছেন মাহমুদউল্লাহ, তার জয়ের গড়ও সবার চেয়ে বেশি। তার নেতৃত্ব দেওয়া ৪৩ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১৬টি ম্যাচে। হার ২৬ ম্যাচে, একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।