যুবারা পাচ্ছে রাজশাহী, নারী দলের জন্য খুলনা স্টেডিয়াম
'হোম অব ক্রিকেট' বলা হয় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের 'ঘর' হওয়ায় সারা বছরই ব্যস্ত সূচি থাকে এই মাঠে। সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ম্যাচ হয় মিরপুর স্টেডিয়ামে। এ ছাড়া জাতীয় দলসহ এইচপি, বাংলা টাইগার্সের বিভিন্ন কার্যক্রমের কারণে অন্যান্য দলগুলো অনুশীলন করা নিয়ে ঝামেলায় পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যে বিসিবির একাডেমি মাঠে সারতে হয় অনুশীলন, কিংবা ছুটে যেতে হয় বিকেএসপিতে।
এই সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় নারী দল ও ছেলেদের বয়সভিত্তিক দলের অনুশীলনের জন্য ঢাকার বাইরে আলাদা আলাদা স্টেডিয়াম বরাদ্দ করতে যাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল স্টেডিয়াম সংস্কারের পরিকল্পনা সাজিয়েছে বিসিবি। ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে।
এমনই জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম। তিনি জানান, অনূর্ধ্ব-১৯ পুরুষ দলের জন্য রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়াম ও জাতীয় নারী দলের জন্য খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম প্রস্তুত করা হচ্ছে। বরিশাল বিভাগী স্টেডিয়ামও ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে সংস্কার করা হবে।
বুধবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে মাহবুব আনাম বলেন, 'আগে শুধু জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দল অনুশীলন করতো। এখন অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দল হয়েছে, জাতীয় নারী দলের এফটিপি হয়েছে। তাই মাঠ যেমন প্রয়োজন, অনুশীলনের সুবিধাও প্রয়োজন। আগে বলেছিলাম, একেকটা সেন্টার ধরে কাজে হাত দেব। আমি রাজশাহী ঘুরে এসেছি। আমরা এরই মধ্যে সেখানে কাজে হাত দিয়েছি।'
চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো রাজশাহীতে অনুশীলন সুবিধা রাখা হবে বলে জানান তিনি। অনূর্ধ্ব-১৯ দল জানুয়ারিতে আবু নাসের স্টেডিয়ামে ক্যাম্প করলেও তাদের জন্য রাজশাহী স্টেডিয়াম বরাদ্দ করা হবে। মাহবুব আনাম বলেন, 'রাজশাহীতে ইনডোর সুবিধাটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। ওটার মেরামতের কাজে হাত দিয়েছি।'
'চট্টগ্রাম ও সিলেটে আমরা যেভাবে অনুশীলন সুবিধা তৈরি করেছি, একইভাবে আমরা রাজশাহীতে কাজটা করব। আমরা আশা করছি এই বর্ষার মধ্যেই রাজশাহীর অনুশীলন সুবিধা প্রস্তুত করব এবং অনূর্ধ্ব-১৯ ছেলেদের জন্য একটা স্থায়ী অনুশীলনের ব্যবস্থা করব।' যোগ করেন তিনি।
আবু নাসের স্টেডিয়ামে এক সময় নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতো। বিপিএলের প্রথম দুই আসরের খেলাও এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট হলেও ২০১৬ সালের পর এখানে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয়নি। ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল ঝড়ে স্টেডিয়ামটির বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সাত বছরেও যা সংস্কার করা হয়নি।
অবশেষে মাঠটির সংস্কার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে, এখানে স্থায়ীভাবে অনুশীলন করবে নারী দল। মাহমুব আনাম বলেন, 'একইভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে খুলনাকে আমরা নারী দলের অনুশীলনের জন্য তৈরি করব। আমাদের সার্ভেয়াররা এখন রাজশাহীতে কাজ করছে। রাজশাহীর কাজ শেষ করে তারা খুলনার কাজটা ধরবে।'
বরিশাল স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ নিয়ে তিনি বলেন, 'তৃতীয়ত আমরা বরিশালের কাজ ধরব। এনএসসি বরিশালের মাঠের উন্নয়ন কাজ করেছে। আমরা একইসাথে মাঠের বাইরে অনুশীলনের জন্য বাকি যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেগুলোর কাজ শুরু করব। এ তিনটা মাঠের কাজই আমরা এই মৌসুমে শুরু করব। আশা করছি এই বছরের মধ্যেই এই তিনটা সুবিধা তিনটা গ্রুপের অনুশীলনের জন্য তৈরি হয়ে যাবে।'
মাঠ সংস্কারসহ উন্নত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখলেও রাজশাহীতে বিপিএলের মানের টুর্নামেন্ট আয়োজন সম্ভব নয় বলে জানান মাহমুব আনাম। এ কারণে অন্যান্য পর্যায়ের ক্রিকেট দিয়ে রাজশাহীকে সচল করার পরিকল্পনা বিসিবির। মাহবুব আনামের ভাষায়, 'কিছু বাড়তি সুযোগ-সুবিধা লাগে (ম্যাচ দেওয়ার জন্য)। প্রোডাকশন সুবিধা লাগে।'
'রাজশাহীতে আমরা দেখেছি মিডিয়া সেন্টার ও প্রোডাকশনের জায়গা নেই। যেহেতু এটা ফ্যাসিলিটিজ (ডিপার্টমেন্টের) আন্ডারে, আমি হাত দিতে চাচ্ছি না। তবে রাজশাহীতে হোটেল হয়েছে। আমরা শিগগির চেষ্টা করব অনূর্ধ্ব-১৯, 'এ' দলের খেলাগুলো রাজশাহীতে ফেরত নিতে।' বলেন বিসিবির এই পরিচালক।