হাসান-তাসকিনদের বোলিং আগুনে পুড়ে ভস্ম আইরিশরা
আয়ারল্যান্ডের বেশি ভয় ছিল বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ নিয়ে। পেসারদের বিপক্ষে কঠিন হবে জানলেও ততোটা দুঃশ্চিন্তা ছিল না। কিন্তু এবারের সফরে বাংলাদেশের পেসারদের বিপক্ষেই হাবুডুবু খেতে হচ্ছে তাদের। প্রথম ম্যাচে পেসারদের বিপক্ষে ৬ উইকেট হারানো আইরিশরা তৃতীয় ওয়ানডেতে দিগ্বিদিক ছুটলো, শেষ পর্যন্ত দিশা মিললোই না। বাংলাদেশের তিন পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনের আগুনে বোলিংয়ের মুখে সামান্যতেই গুটিয়ে গেল তাদের ইনিংস।
বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ১০১ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর জন্য তামিম ইকবালের দল বোলিং করেছে মাত্র ২৮.১ ওভার, সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট। আইরিশদের মাত্র দুজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেছেন। বাকি ৯ ব্যাটসম্যানের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৮।
পেসারদের দিয়ে আইরিশদের কীভাবে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ, সেটা তাদের বোলিং সেটআপই বলে দেয়। ২২ ওভারের মধ্যে ৮ উইকেট পড়ে গেলেও তখনও বোলিংয়ে আসেননি সাকিব আল হাসান, এমনকি বোলিংই করতে হয়নি তাকে। এবারই প্রথম কোনো ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষের ১০টি উইকেই নিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। এর আগে ১২ বার ম্যাচে ৮টি করে উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা।
আইরিশদের ইনিংস শুরুতেই ওলট-পালট করে দেন হাসান, প্রথম তিন উইকেটই তার শিকার। তরুণ এই পেসারকে উইকেট দিলেও তাসকিনের বিপক্ষে অবশ্য বেশি ভুগতে হয়েছে সফরকারীদের। বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতা হয়ে ওঠা ডানহাতি এই পেসার প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ১১ রানে একটি উইকেট নেন। এবাদতও আইরিশদের ভুগিয়েছেন, তবে তার লাইন-লেংথ গোছানো ছিল না। উইকেটের দেখা মিললেও আইরিশদের খারাপ সময়ের মাঝেও তিনি সবচেয়ে বেশি ৪.৮৩ ইকোনমিতে রান খরচা করেন।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আয়ারল্যান্ডকে শুরু থেকেই পরীক্ষা দিতে হয় হাসান ও তাসকিনের বিপক্ষে। প্রথম ৪ ওভারে তারা ৪ রান করে। পঞ্চম ওভারেই বেজে ওঠে ভাঙনের সুর। স্টিফেন ডোহেনিকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন হাসান। এরপর তার দাপটে ১০ রানের মধ্যেই আরও ২ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ফিরে যান পল স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টর। ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে পথ ভুলে যাওয়া আয়ারল্যান্ডের বিপদ আরও বাড়ান তাসকিন, ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক অ্যান্ডি ব্যালবার্নিকে।
এখান থেকে কিছুটা প্রতিরোধ, দলে স্বস্তি ফেরানোর জোর চেষ্টা চালান লরক্যান টাকার ও সেরা ইনিংস খেলা কার্টিস ক্যাম্ফার। এই জুটিতে ৪২ রান যোগ করেন তারা। ৩১ বলে ২৮ রান করা টাকারকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন এবাদত। এরপর বাংলাদেশের পেসারদের বিপক্ষে কেবল ক্যাম্ফার লড়তে পেরেছেন। ৪৮ বলে ৪টি চারে ইনিংস সেরা ৩১ রান করেন তিনি।
৮.১ ওভারে ৩১ রান খরচায় ৫টি উইকেট নেন হাসান। ৮ ওয়ানডে খেলা ডানহাতি এই পেসার প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের দেখা পেলেন তিনি, এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। আরও কৃপণ বোলিং করা তাসকিন ১০ ওভারে মাত্র ২৬ রানে ৩টি উইকেট পান। ৬ ওভারে ২৯ রানে ২ উইকেট পান এবাদত। নাসুম আহমেদ ৩ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১ এভার বোলিং করলেও উইকেটের দেখা পাননি।