বৃষ্টির দাপটের মাঝে বাংলাদেশের কিছুটা বোলিং অনুশীলন
টসের পরই বৃষ্টির হানা। যদিও খেলা শুরু হয় ঠিক সময়েই। কিন্তু আগে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ৪.৩ ওভারের পর শুরু হওয়া বৃষ্টি ঝরে অনেকটা সময়। দীর্ঘ বিরতির পর বিকাল সাড়ে ৪টায় খেলা শুরু হয়। এ দফায় ২৯.১ ওভার খেলা হওয়ার পর আবার শুরু হয় বৃষ্টি, কিছুক্ষণ পর একবার খেলা শুরুর সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা আর হয়নি।
এরপর থেকে থেকে ঝরা প্রকৃতির কান্না আর থামেনি, ৮টা ২৬ মিনিটে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০০৬ ভেন্যু হিসেবে যাত্রা শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুটি ওয়ানডে পরিত্যক্ত হলো। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
বৃষ্টির মাঝে মাঝে ব্যাটিং করা নিউজিল্যান্ড সব মিলিয়ে ব্যাটিং করে ৩৩.৪ ওভার, ৫ উইকেটে ১৩৬ রান তোলে তারা। কিউইদের খারাপ সময়ে আটকে বাংলাদেশ কিছুটা বোলিং অনুশীলন সেরে নিয়েছে, এটা বলাই যায়। ভেজা ও মন্থর উইকেটে পুরনো চেহারায় দেখা মেলে মুস্তাফিজুর রহমানের। শুরুতেই কিউইদের চেপে ধরে তাদের কঠিন পরীক্ষা নেন বাঁহাতি এই পেসার।
বিশ্বকাপ দলে বিবেচনায় থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, শেখ মেহেদি হাসান, তানজিম হাসান সাকিবরা বোলিং করার সুযোগ পান। তবে মুস্তাফিজের পর নাসুম আহমেদের বিপক্ষে বেশি ভুগতে হয় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। সাবধানী শুরুর পরও দিক হারানো দলটি মাঝে ঠিক পথ খুঁজে পেলেও সে পথে বেশি সময় থাকা হয়নি। খেলা হওয়া পুরো সময়ে শাসন করেছেন বাংলাদেশের বোলাররাই।
টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। শুরু থেকেই তোপ দাগেন মুস্তাফিজ, অন্য পাশ থেকে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে থাকেন তানজিম সাকিব। ৪.৩ ওভারে বৃষ্টি নামার আগে বিনা উইকেটে ৯ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে বিপাকে পড়তে হয় কিউইদের। সপ্তম ওভারে মুস্তাফিজের দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামেন ২০ বলে ৯ রান করা নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ফিন অ্যালেন।
দ্বিতীয় আঘাতটি হানতেও সময় নেননি অনেকদিন পর চেনা রূপে হাজির হওয়া মুস্তাফিজ। ইনিংসের নবম ওভারে একইভাবে চ্যাড বোয়েজকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বাংলাদেশের এই পেসার। ১৬ রানেই নেই ২ উইকেট, কিউইরা তখন দিশেহারা। এখান থেকে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার উইল ইয়াং ও হেনরি নিকোলস।
তৃতীয় উইকেটে ১১৭ বলে ৯৭ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। এই জুটিতে ২৭.৪ ওভারে ১১৩ রানে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। নিকোলসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে এই জুটিও ভাঙেন মুস্তাফিজ। ফেরার আগে ৫৭ বলে ৩টি চারে ৪৪ রান করেন নিকোলস। কিছুক্ষণ পর থামতে হয় ইয়াংকেও। নাসুমের বলে এগিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন ৯১ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৮ রান করা কিউই এই ওপেনার। এটা তার চতুর্থ ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি।
এই ওভারেরই চতুর্থ বলে রাচিন রবীন্দ্রকেও ফিরিয়ে দেন নাসুম। বাঁহাতি এই স্পিনার ৮ ওভারে ৩টি মেডেনসহ সবচেয়ে কম ২.৬২ ইকোনমিতে ২১ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন। ৭ ওভারে একটি মেডেনসহ ২৭ রানে ৩টি উইকেট নেন মুস্তাফিজ। তানজিম সাকিব ৫.৪ ওভারে ২৫ রানে কোনো উইকেট পাননি। শেখ মেহেদি হাসান ৭ ওভারে ২৭, মাহমুদউল্লাহ ৪ ওভারে ২১ ও সৌম্য ২ ওভারে ১৩ রান খরচায় উইকেটশূন্য থাকেন।