সাকিবের দেশে যাওয়ার ঘটনার প্রশংসা করা উচিত বলে মনে করেন তাসকিন
বিশ্বকাপে টানা হারের বৃত্তে থাকা দল যখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ খেলে কলকাতা যাওয়ার অপেক্ষায়, সাকিব আল হাসান তখন দেশে ফিরে যান। তার এমন হঠাৎ সফরে অনেকেই বিস্মিত, শুরু হয় সমালোচনা। মিরপুরে শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করে মাঠ ছাড়ার সময় 'ভুয়া ভুয়া' দুয়োধ্বনিও শুনতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে।
দুঃসময়ে দলকে রেখে দেশে ফেরার ঘটনায় সাকিবের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। দলের স্বাভাবিক গতিতে এর প্রভাব পড়েছে কিনা, আছে এমন প্রশ্নও। ইডেন গার্ডেন্সে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ অবশ্য এসব প্রশ্নের উত্তর সহজভাবেই দিয়ে গেলেন। সাকিব নিয়ম মেনে দেশে যাওয়ায় কোনো সমস্যা দেখেন না তিনি।
দেশের জন্য ভালো কিছু করতে নিজের সমস্যা সমাধানে দেশে গিয়ে অনুশীলন করায় সাকিবকে প্রশংসা করা উচিত বলে মনে করেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিন বলেন, 'আসলে এটায় (সাকিবের অনুপস্থিতি) খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। সে যখন ফিরে এসেছে, আমরা দলের সবাই খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। আসলে সে নিজের কিছু উন্নতির জন্য গিয়েছিল। ব্যাটিং প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করছিল না।'
'এ জন্য নির্দিষ্ট কিছু অনুশীলনের জন্য গিয়েছিল যে আমাদের দলের জন্য ভালো কিছু করতে পারেন। আমি মনে করি, আমাদের এটাকে প্রশংসা করা উচিত। সে আমাদের ম্যানেজমেন্ট বিসিবির সঙ্গে কথা বলেছে এবং তারপর গিয়েছে। সেদিন আমাদের বিশ্রামও ছিল। অফিসিয়াল অনুশীলনে সে কিন্তু দলের সঙ্গেই আছেন। আমি মনে করি আমাদের এটাকে আরও প্রশংসা (অ্যাপ্রিশিয়েট) করা উচিত। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। এটা আমাদের দলে কোনো প্রভাব রাখেনি।' যোগ করেন তাসকিন।
মিরপুরে দুদিন অনুশীলনের পর ২৬ অক্টোবর কলকাতায় ফিরে দলের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব। নিয়ম মেনেই বাংলাদেশ অধিনায়ক সবকিছু করেছেন জানিয়ে তাসকিন বলেন, ' টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সে যখন কথা বলেছে, তার ব্যাটিং নিয়ে একটা কিছু অনুশীলন করা দরকার। আবার সেই দিনটা বিশ্রামের দিনও ছিল। কলকাতা থেকে কাছে ছিল। এ জন্য আসলে সে গিয়েছে। সে তো আসলে অন্য কোনো কারণে যায়নি। ক্রিকেট সম্পর্কিত কারণে গিয়েছিল। কোচ ও ম্যানেজমেন্ট যখন বলেছে ওকে ফাইন, তখন সে গেছে। কোনো নিয়ম ভঙ্গ করে যায়নি। অনুমতি নিয়ে গেছে।'
সাকিবের এই অনুশীলনের ব্যাপারটি দলের সবাই প্রশংসা করেছেন বলে জানান তাসকিন। তার ভাষায়, 'গিয়ে কিন্তু চার ঘণ্টা ব্যাটিং অনুশীলন করেছে। পরের দিনেই আবার অনুশীলন করে চলে এসেছে। এটা আসলে আমরা প্লেয়াররা, টিম মেটটরা অ্যাপ্রিসিয়েট করছি, যে বিশ্রামের দিনে সে গিয়ে ব্যাটিং করছে। তার ব্যাটিংটা আমাদের দলের জন্য এতোটা গুরুত্বপূর্ণ, সেও মরিয়া যে কীভাবে ভালো করা যায়। তার আসার পর আমাদের দলের সবাই একটা ডিনার করেছি। একটা ভালো সময় কাটিয়েছি। ভালো পারফর্ম করে আশা করছি সামনে নতুন কিছু শুরু করব। চারটা ম্যাচ আছে, এই চারটা ম্যাচও যদি ভালো খেলতে পারি, তাহলে ভিন্ন কিছু হতে পারে। এখন আসলে কালকের ম্যাচেই নজর আমাদের।'
দেশে ফিরে প্রথম দিন (বুধবার) দুপুর আড়াইটায় মিরপুর স্টেডিয়ামে যান সাকিব। নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে ইনডোরে শুরু করেন ব্যাটিং অনুশীলন। পাঁচটা পর্যন্ত অনুশীলন করেন বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। প্রায় আড়াই ঘণ্টা শুধু ব্যাটিং নিয়েই কাজ করেন তিনি। পরের দিন সকালে শুরু করে ব্যাটিং নিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা কাজ করেন সাকিব। এবারের বিশ্বকাপে চার ম্যাচে ১৪ গড়ে ৫৬ রান করেছেন সাকিব। হতাশার এই পারফরম্যান্সের জন্যই শৈশবের কোচের দ্বারস্থ হওয়া অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের।