‘কনসার্টে নয়, ক্রিকেটে বিনিয়োগ করতে হবে’
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের অনেক কিছুতেই বদল এসেছে। ক্রীড়াঙ্গন এর মধ্যে অন্যতম। আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এসেছে বড় পরিবর্তন। বিসিবিতে মোট ১৫টি পরিচালকের পদ শূন্য হয়েছে। পালাবদলের এ যাত্রায় বিপিএলকেও বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিসিবি। অনেক কিছু সংযোজন করে গোছালোভাবে ভিন্ন আঙ্গিকে এবারের আসর সাজানোর কথা জানানো হয়। তবে বিপিএলের সবগুলো আসরে খেলা তামিম ইকবালের কাছে এবারের আসরও আগের মতোই মনে হচ্ছে।
'বিপিএল মিউজিক ফেস্ট'- নামে বিসিবির করা কনসার্টগুলো ছাড়া এখন পর্যন্ত নতুন কিছু চোখে পড়েনি তামিমের। যদিও কনসার্ট বা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের রীতি বিপিএলে বেশ পুরনো, আগের ১০ আসরের কয়েকটি জমকালো অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এবারের ব্যতিক্রমী আয়োজনে মিরপুরে ছাড়াও কনসার্ট হয়েছে সিলেট ও চট্টগ্রামে; যা আগে কখনও হয়নি। পাশাপাশি গ্যালারিতে বিনামূল্যে পানি সরবরাহ, প্রচারণায় জোড় দেওয়ার ব্যাপারগুলোকে বাড়তি সংযোজনের তালিকায় রাখা যায়।
তবে বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ ও বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম যেভাবে 'চমকপ্রদ' বিপিএলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তেমন কিছু এখনও দেখা যায়নি। এ নিয়ে অকোপটেই মন্তব্য করেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম। এ ছাড়া এসব বিষয়কে সেভাবে গুরুত্বও দিতে চান না অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টের উন্নয়ন বা নতুনভাবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বা কনসার্টে নয়, তার চাওয়া ক্রিকেটে যেন বিনিয়োগ করা হয়।
রোববার মিরপুরের একাডেমি মাঠে অনুশীলনের পর তামিম বলেন, 'সত্যি কথা বলতে, আমি অন্যরকম কিছু দেখিনি কনসার্টগুলো ছাড়া। আমার কাছে মনে হয়, অন্যরকম বিপিএল যদি আমাদের করতে হয়, আমাদেরকে ক্রিকেটে বিনিয়োগ করতে হবে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের টুর্নামেন্টে বিনিয়োগ করতে হবে, কনসার্ট বা অন্য কিছুতে নয়। ক্রিকেটে যদি বিনিয়োগ করি, টুর্নামেন্টে যদি বিনিয়োগ করি; তখন আমরা বলতে পারবো যে, এটা নতুন করে বিপিএল। কনসার্ট আগেও হয়েছে, এখনও হয়েছে; দারুণ একটা অনুষ্ঠান হয়েছে যা দেখেছি, আমি ছিলাম না দেশে।'
বিপিএল নতুনভাবে হচ্ছে কিনা, এ নিয়ে অবশ্য ঢালাওভাবে মন্তব্য করতে চাইলেন না তামিম। তার মতে, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এটা নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না, 'এখনও এটা কিছুটা তাড়াতাড়ি হয়ে যায় মন্তব্য করার জন্য, কারণ আমি জানি না, কালকে কী আছে আমাদের জন্য। এটাও ন্যায্য হবে না যে, আমি একটা মন্তব্য করে দিলাম, যেটা খারাপভাবে গেল। আমি এতোটুকু বলতে পারি, কেউ যদি আমার কাছে পরামর্শ চায়, আমি এতোটুকু বলব যে, বিপিএল পরিবর্তন করতে চাইলে টুর্নামেন্ট ও ক্রিকেটে বিনিয়োগ করুন। এতেই কেবল বদলাতে পারে টুর্নামেন্ট।'
বিসিবি ও ক্রিকেটারদের যৌথ চেষ্টায় বিপিএল সফল হতে পারে জানিয়ে তামিম বলেন, 'দেখুন, ক্রিকেটটা কেমন হবে এটা নির্ভর করে খেলোয়াড়রা কেমন খেলছে, সেটার ওপর। এটা তো আসলে যারা আয়োজক, তাদের হাতে কিছু থাকে না। তাদের হাতে কী থাকে, সেরা ফ্যাসিলিটিজ দেওয়া, সেরা উইকেট দেওয়া, সেরা ধারাভাষ্যকার নিশ্চিত করা, ক্যামেরা ও টেকনোলজি যেটা পাওয়ায় যায়, তা পাওয়া।'
'এটা হলো যারা দায়িত্বে বসে আছেন, তাদের কাজ। কিন্তু উনারা কোনোদিন এটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না আসলে খেলা দুইশ রান-দুইশ রানের হবে নাকি ৬০ রান, ৬০ রানের হবে। ওটার দায়িত্ব দল ও খেলোয়াড়দের নিতে হবে। এটার বাইরে যেগুলো, এগুলো উনাদের দায়িত্ব। উনারা যদি উনাদের কাজটা ভালো মতো করেন, আমরাও যদি আমাদের কাজ ভালো মতো করি; তাহলে সফল টুর্নামেন্ট হবে।' যোগ করেন তামিম।