অস্থির শ্রীলঙ্কাকে ক্রিকেটারদের ‘উপহার’
ঋণের বোঝায় জেরবার অবস্থা, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা বেশামাল। দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে চাপের মুখে রনিল বিক্রমাসিংহে। সব মিলিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
এমন সময়ে বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে জানিয়েছিলেন, সিরিজ জিতে দেশে ফিরে জনগণের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফুটাতে চান তারা। এই মিশনে সফল তারা। চট্টগ্রামের ফ্ল্যাট উইকেটে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ফল না এলেও মিরপুর টেস্টে ব্যাটে-বলে শাসন করে বিশাল এক জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ১০ উইকেটের জয় পেয়েছে সফরকারীরা। এই জয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো তারা। সিরিজ জেতাটা উত্তাল শ্রীলঙ্কার মানুষের জন্য প্রাপ্তি হবে বলে মনে করেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটসমান নিরোশান ডিকভেলা।
মিরপুর টেস্টে বিশাল জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে ডিকভেলা বলেন, 'আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি, দেশে আর সব কিছু পেছনে ফেলেই এসেছি। আমাদের চাওয়া ছিল ভালো ক্রিকেট খেলা এবং সিরিজ জয় করা। তবে অবশ্যই এটি দেশের মানুষের জন্য একটি প্রাপ্তি হবে, দেশ এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার জন্য এটা ভালো।'
মিরপুর টেস্টে জয় উঁকি দিলেও উত্তেজনা কাজ করেনি শ্রীলঙ্কা শিবিরে। লিটন কুমার দাসের উইকেট টার্নিং পয়েন্ট ছিল জানিয়ে ডিকভেলা বলেন, 'আমাদের ড্রেসিং রুম ধীরস্থিরই ছিল। আমরা জানতাম একটি উইকেটের ব্যাপার। একটি উইকেট নিলেই টেলএন্ডাররা চলে আসবে ব্যাটিংয়ে। আমরা চাপ পেয়ে বসতে দিইনি। লাঞ্চের পর আসিথা দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নেয় (লিটনের), এটিই ছিল টার্নিং পয়েন্ট।'
দেশে কী হচ্ছে, সেসব মাথায় নিতে চাননি লঙ্কান ক্রিকেটাররা। পুরো মনোযোগ সিরিজে দেওয়ার চেষ্টা ছিল তাদের। সিরিজ শুরুর আগেই এটা জানিয়ে দেন করুনারত্নে। দেশের মানুষকে কিছুটা হলেও আনন্দ দিতে সিরিজ জেতাটা সফরকারী দলটির জন্য ছিল চ্যালেঞ্জের মতো। সেটা করতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই হাসি ফুটেছে ম্যাথুস-আসিথাদের মুখে।