আসামে নাগরিকত্ব সংকট: ‘উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে’
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। শনিবার সকালে প্রকাশিত এই তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ মানুষের।
দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এই নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তালিকায় এই ১৯ লাখের বেশী মানুষকে বাদ দেয়ার পর তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে সাড়ে এগারো লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার দুই বছরের মাথায় তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ পার করছে কঠিন সময়। ঠিক এ সময়ে প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত লাগোয়া এই রাজ্যের এমন পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান বলছেন, আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় ১৯ লাখ নাগরিককে বাদ দেয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে, কেননা ওই ১৯ লাখকে সরাসরি বাংলাদেশি বলা হচ্ছে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নে ওই নাগরিকদের বিষয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
“বলা হচ্ছে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে তাদের জন্য আপিলের ব্যবস্থা রয়েছে। আপিল শেষে যারা নাগরিকত্ব ফিরে পাবেন না তাদেরকে ডিটেনশনে (আটক) থাকতে হবে। এরপর তাদের কী হবে? আপিলের নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে, এটি স্পষ্ট।”
আসামে নাগরিকত্ব নিয়ে এই সংকটকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বললেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই অধ্যাপকের মতে, একারণে বাংলাদেশের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
“কারণ ভারতের সর্ব্বোচ্চ মহল থেকেই ওই ১৯ লাখকে বাংলাদেশি হিসেবে বলা হচ্ছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অনেকবার বাদ পড়াদের বাংলাদেশি বলেছেন এবং তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও নানা ইঙ্গিত দিয়েছেন।”
বাংলাদেশের এ বিষয়ে ‘স্বোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই’ মন্তব্য করে অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, “এটি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনা হওয়া দরকার। ভারতের কাছে স্পষ্ট জবাব চাইতে হবে যে, ওই ১৯ লাখ নাগরিকের ঠাঁই হবে কেথায়। এই প্রশ্নের উত্তর জানার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশেকে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে।”