আসামে নাগরিকদের বাদ পড়া নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের আসামে চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে ১৯ লাখের বেশি মানুষের বাদ পড়ার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে ভারতের আশ্বাসের প্রতি বিশ্বাস রাখে বাংলাদেশ।
শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মন্ত্রী জানান, তারা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকরের ঢাকা সফরের সময় ২০ আগস্টের বৈঠকে আগেভাগেই এ বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন।
“আপনারা শুনেছিলেন...তিনি (জয়শংকর) স্পষ্ট বলেছিলেন যে এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং (বাংলাদেশের জন্য) কোনো সমস্যা হবে না,” বলেন ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব গতিশীল এবং এখানে অনেক ঘটনা ঘটবে ও তার ব্যবস্থাপনাও করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, “উদ্ভূত সমস্যা এবং সেই সাথে উদ্ভূত সমাধানও থাকবে।”
ড. মোমেন আরও বলেন, ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ যে সমস্যা মোকাবিলা করছে সে বিষয়টি তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে আছে। দেশে শ্রমিকসহ গরীব ও সাধারণ মানুষ, এমনকি যাদের কোনো শিক্ষা নেই তাদেরও কাজের অভাব নেই।
“তাই, আমি বিশ্বাস করি না যে আমাদের দেশের মানুষ এ মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশে যাবে। যদি তারা সেখানে গিয়েও থাকেন তাহলে সেটি ছিল ১৯৭১ ও ১৯৪৭ সালের আগে।”
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখের বেশি মানুষের নাম। শনিবার সকালে প্রকাশিত তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ মানুষের। এনআরসি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। সকাল ১০টায় অনলাইনে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা প্রকাশের পর ১৯ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে বাদ দেয়া হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য বলেছে, যাদের নাম চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় স্থান পায়নি তাদের সব আইনি বিকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিদেশি ঘোষণা করা যাবে না। এনআরসির বাইরে থাকা প্রতিটি ব্যক্তি বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন এবং আবেদন করার সময়সীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ গেছে তাদের পক্ষে যুক্তি শোনার জন্য পর্যায়ক্রমে কমপক্ষে এক হাজার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এর মধ্যে ১০০টি ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে এবং আরও ২০০টি আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই স্থাপন করা হবে। ট্রাইব্যুনালের মামলায় কেউ মামলা হারলেও তারা উচ্চ আদালত এবং তারপর সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করতে পারবেন।