করোনার বাধা ডিঙ্গিয়ে কফি উৎপাদনের জয়রথ
মহামারির সময়ে বাজারে বিভিন্ন দ্রব্যের টান পড়েছে। জীবাণুনাশক, ইস্ট কিংবা অন্যান্য দ্রব্যের টান পড়লেও কফি খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় না। কফিপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির খবর এটি।
ব্রাজিলের মতো কফি উৎপাদনের শীর্ষে থাকা দেশগুলোতে কোভিড-১৯-এর ভয়াবহ প্রভাব পড়া সত্ত্বেও, সুপারমার্কেটে এখনো এটি সহজলভ্য। সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যায় ব্রাজিলের স্থান দ্বিতীয়। ভারত, মেক্সিকো ও কলম্বিয়ার মতো কফি উৎপাদনে শীর্ষ দশে থাকা দেশগুলোও সর্বোচ্চ আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষ দশে আছে। কফি রপ্তানির জন্য জনপ্রিয় পেরু ও উগান্ডা তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে লকডাউন জারি করেছে।
লন্ডনের কফি ব্যবসায়ী 'মার্সেন্টা- দ্য কফি হান্টার' প্রতিষ্ঠানের স্টিভেন হার্স্ট বলেন, 'এই সময়ে কফি উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এটি ধরে নেওয়াই স্বাভাবিক। তবে প্রকৃতপক্ষে, এর স্বপক্ষে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'
প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশ থেকে কফি আমদানি করে। উগান্ডা ও পেরু থেকে কফিবিন কিনে নেয় তারা। মহামারির এই সময়েও ব্রাজিল, ভারতের মতো মহামারির প্রভাবে বিপর্যস্ত দেশগুলো থেকেই বেশিরভাগ কফি আমদানি করা হয়। রুয়ান্ডার মতো পুরো দেশজুড়ে লকডাউন জারি থাকা দেশ থেকেও বড় অংশে কফির আমদানি অব্যাহত আছে।
রুয়ান্ডার 'রুটস অরিজিন' নামের একটি কফি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রধান গিলবার্ট গাতালি বলেন, 'লকডাউনের ফলে পুরো দেশে গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। খুবই স্বল্পসংখ্যক মানুষের চলাচল ছিল। এ সময়ের কাজ একদমই আলাদা ছিল।'
মার্চ মাসে কফি বিনের ফসলের মৌসুমে লকডাউনের ঘোষণা আসে। তবে কৃষিকাজ চালু রাখার অনুমোদন দেওয়া হয়। দেশটির রাজধানী থেকে কফি উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোতে যাতায়াতের জন্য গিলবার্ট বিশেষ অনুমতি নেন।
অন্যদিকে, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিষ্ঠানগুলো অর্ডার বাতিল করছে। নিউইয়র্কের ইথাকার 'গিমমি! কফি' নামের প্রতিষ্ঠানটির আগে ৭টি কফির দোকান ছিল। লকডাউন শুরু হওয়ার পর ৬টি দোকানই বন্ধ করে দেওয়া হয়; কাজ হারান অনেক কর্মচারী।
তবে ব্রাজিলে কফি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মেশিনের ব্যবহারের করা হয়। এ কারণে অল্প সংখ্যক কর্মচারীই এ কাজে নিযুক্ত থাকেন। দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি এ কারণে অব্যাহত রয়েছে।
২০২০ সালে ফসল উৎপাদনে সর্বোচ্চ পরিমাণের রেকর্ড গড়ার পথে আছে ব্রাজিল।
বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর প্রভাবে অনেক খাতেই ধস নেমেছে। অনেক বিশ্লেষকরা এই অবস্থাকে বিশ্বায়নের 'সমাপ্তি' আখ্যা দিয়েছেন। তবে এই সংকটকালীন সময়েও অল্প কিছু দ্রব্যের মতো কফির বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রয়েছে।
- সূত্র: এনআরপি