নিজেকে বাক্সবন্দী করে পাচার করেছিলেন যিনি!
নিজ জন্মভূমি ওয়েলস থেকে সদ্যই অস্ট্রেলিয়াতে পা রেখেছেন তরুণ ব্রিয়ান রবসন। কিন্তু খুব শীঘ্রই তিনি বুঝতে পারলেন ঘর ছেড়ে পৃথিবীর অপর প্রান্তে ভিন্ন এক মহাদেশে চলে আসাটা তার কতো বড় ভুল হয়েছে।
দুর্ভাগ্যবশত, স্বদেশে ফেরার জন্যে কাতর ১৯ বছর বয়সী ব্রিয়ানের কাছে সেই ১৯৬৪ সালে তার অভিবাসন খরচ পরিকল্পনা বাবদ ছেড়ে আসা এবং আবার বাড়ি ফেরার বিমানভাড়াও ছিল না।
আর কোন পথ খোলা নেই ভেবে নিতান্ত বাধ্য হয়েই কার্ডিফ থেকে রবসন এক অভিনব ফন্দি আঁটলেন, তিনি ঠিক করলেন নিজেই নিজেকে একটা ছোট বাক্সে ভরে কার্গোর ভেতরে করে পাচার করবেন।
আজ ৫০ বছর পর যখন রবসনের এই অসম্ভব ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার গল্প প্রকাশ পেল এবং সারা বিশ্বে খবরের কাগজগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন রবসন খুঁজে বেড়াচ্ছেন তার দুই পুরনো আইরিশ বন্ধু জন ও পলকে, যারা তাকে ওই বাক্সে ভরে পাঠাতে সাহায্য করেছিলেন।
সিএনএন ট্রাভেলকে রবসন বলেন, 'শেষবার আমি জন ও পলকে দেখেছি আমাকে বাক্সে ভরার মুহূর্তে, বাক্সের ডালা আটকে দিয়ে ওদের একজন জিজ্ঞেস করেছিল 'তুমি ঠিক আছো তো?' আমি উত্তর দিলাম, 'হ্যাঁ'। তারপর ওরা বললো 'গুড লাক'। আমি খুব করে আবারও ওদের দেখতে চাই।
কীভাবে এল বাক্সবন্দী হবার চিন্তা?
নিজেকে বাক্সে ভরে মেইল করার পরিকল্পনার বছরখানেক আগে আগে রবসন ছিলেন ওয়েলসের একজন বাস কন্ডাক্টর। এরপর তিনি ভিক্টোরিয়ান রেলওয়েতে কাজের জন্য আবেদন করলেন এবং সেসময় বেশিরভাগ রেল যোগাযোগ অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
নিজের ১৯তম জন্মদিনের কদিন পরই নিজের নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে মেলবোর্নের উদ্দেশ্যে যাত্রা আরম্ভ করেন রবসন। এই যাত্রার মধ্যেই তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে তেহরান, নয়াদিল্লি, সিঙ্গাপুর, জাকার্তা ও সিডনির মতো শহর।
রবসন স্বীকার করেন সেটি ছিল এক দীর্ঘ যাত্রা, তবে ফিরে আসার চাইতে সেই যাত্রা চালিয়ে যাওয়াই বোধহয় ভালো ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার শহরে পা রেখে এই ওয়েলশম্যান আবিষ্কার করলেন যে তার থাকার জন্যে বরাদ্দকৃত হোস্টেলকে আসলে একটা 'ইঁদুরে ভর্তি গর্ত' বলা চলে।
চাকরি শুরু করার আগেই রবসন ঠিক করে ফেললেন অস্ট্রেলিয়ায় তিনি থাকবেন না। আর একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়ার পর তা আর বদলাবার মানুষ ছিলেন না তিনি । বাড়ি ফেরার জন্যে নিজের ভেতর এক ধরনের জেদ চেপে গিয়েছিল রবসনের।
তবে চাকরি ও হোস্টেল দুটোই ছেড়ে দেওয়ার আগে তিনি ৬-৭ মাস সেখানে রেল অপারেটর হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার শহরের বাইরে নির্জন জায়গাগুলোতে ঘুরে বেড়িয়ে সময় কাটাতেন এবং শেষের দিকে এক পেপারমিলে কাজ জুটিয়ে নেন।
কাজ করলেও নিজের দেশে ফেরার সিদ্ধান্তে তিনি অটল ছিলেন। কিন্তু মুশকিলটা ছিল তাকে আবার অস্ট্রেলিয়ায় সরকারকে দেশে ফেরার ফি দিতে হতো এবং নিজের ফ্লাইটের জন্যও অর্থ জোগাড় করতে হতো।
রবসনের ভাষ্যে, 'এটি ছিল পুরো ৭০০-৮০০ পাউন্ডের মামলা, কিন্তু আমি সপ্তাহে মোটে ৩০ পাউন্ড আয় করতাম। তাই আমার পক্ষে এই খরচ বহন অসম্ভব ছিল।'
হতাশ হয়ে রবসন নিজের হোস্টেলে ফিরে গেলেন সেখানে কোনোকিছু পরিবর্তন হয়েছে কিনা দেখতে। সেখানেই তিনি সদ্য অস্ট্রেলিয়ায় আসা জন ও পল কে পেলেন।
দ্রুতই তিনজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে গেল এবং একদিন বাণিজ্য মেলায় গিয়ে তারা যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরিবহন কোম্পানি 'পিকফোর্ডস'-এর একটি স্টল দেখতে পেলেন।
স্টলের মধ্যে লেখা ছিল 'আমরা যেকোনো কিছু যেকোনো স্থানে পাঠাতে পারি', আর এই লেখা দেখাই রবসন বলে উঠলেন 'তাহলে তো এরা সম্ভবত আমাদেরও স্থানান্তর করতে পারবে।'
ঐ মুহূর্তে কথাটা ঠাট্টা শোনালেও, রবসন কিন্তু নিজের মাথা থেকে এই চিন্তাটা বের করে দিতে পারছিলেন না।
বাক্সবন্দী পলায়ন
পরদিন রবসন গেলেন অস্ট্রেলিয়ান এয়ারলাইনস 'কান্টাস'-এর মেলবোর্ন অফিস শাখায়। উদ্দেশ্য ছিল বিদেশে বাক্স পাঠানোর প্রক্রিয়া জেনে আসা। তিনি অফিস থেকে সর্বোচ্চ কতো ওজনের বাক্স পাঠানো যায়, তার জন্যে প্রয়োজনীয় কী কী কাগজপত্র লাগবে এবং ডেলিভারির সময় ফি পরিশোধ করা যায় কিনা সেসব খোঁজ নিতেও ভুললেন না।
সব তথ্য নিয়ে হোস্টেলে ফিরে রবসন তার দুই বন্ধু জন ও পলকে জানালেন, তিনি তার সমস্যা সমাধানের উপায় বের করে ফেলেছেন।
তারা জানতে চাইলো রবসনের কাছে যে সে টাকার ব্যবস্থা করেছে কিনা। রবসন উত্তর দিলেন, 'না, আমি অন্য উপায় বের করেছি।
আমি নিজেই নিজেকে ডাকযোগে পাঠাবো।' এদিকে পল বলে উঠলেন, 'দাঁড়াও, তাহলে আমি স্ট্যাম্প কিনে আনছি।'
রবসনের ভাষ্যে, তার পুরো পরিকল্পনা শুনে প্রথমটায় পল ভাবলো আমি মূর্খ, তবে জন অবশ্য আমার পরিকল্পনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়নি।
এরপর তিন দিন ধরে নিজেদের মধ্যে বিস্তর আলোচনার পর রবসন বন্ধুদের তার পক্ষে আনতে সক্ষম হলেন।
তারপর রবসন নিজে ৩০,২৬ ও ৩৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একটি কাঠের বাক্স কিনে আনলেন এবং পরবর্তী এক মাস ধরে এ ব্যাপারে বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করলেন।
বাক্সের ভেতরে রবসন ও তার স্যুটকেসের জায়গা হওয়ার ব্যাপারটি তারা নিশ্চিত করলেন। সাথে দিয়ে দিলেন একটি বালিশ, টর্চ, এক বোতল পানি, মূত্রত্যাগের জন্যে একটি বোতল এবং লন্ডনে পৌঁছাবার পর বাক্স খোলার জন্যে একটি ছোট হাতুড়ি।
এরপর এই ত্রয়ী একটি 'ট্রায়াল রান' দিলেন। রবসনকে বাক্সে ভরে সীলগালা করে দেওয়া হলো এবং মেলবোর্নের কাছেই এক এয়ারপোর্টে পাঠাতে ট্রাকে উঠিয়ে দেওয়া হলো।
পরদিন সকালে আবারও রবসনকে বাক্সে ঢুকানো হলো এবং বন্ধুরা তাকে বিদায় জানিয়ে বাক্স আটকে দিলেন। বাক্স থেকে মুক্ত হবার জন্য রবসনকে অপেক্ষা করতে হবে এরপর আরও ৫ দিন।
রবসন বললেন 'প্রথম ১০ মিনিট ভালোই ছিল, কিন্তু বুকের উপর হাঁটু জড়ো করে রাখলে ব্যথা শুরু হয়ে যায়।'
এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর কয়েক ঘন্টা পর বাক্সটি প্লেনে তোলা হয়।
'এরই মধ্যে আমার হাঁটুতে খিল ধরে গেল। আর প্লেন ছাড়ামাত্রই আমার অক্সিজেনের ব্যাপারটা মনে আসলো। এই প্লেনগুলো প্রেসারাইজড থাকেনা, তাই এখানে খুব কম অক্সিজেন থাকে।'
মেলবোর্ন থেকে সিডনি পর্যন্ত রবসনের যাত্রার প্রথম ৯০ মিনিট ছিল অবিশ্বাস্য রকম যন্ত্রণাদায়ক।
যন্ত্রণাময় দীর্ঘ যাত্রা
কিন্তু তখনো পর্যন্ত রবসনের আরো বিভীষিকার সম্মুখীন হওয়া বাকি ছিল। সিডনিতে পৌঁছাবার পর তাকে বহনকারী বাক্সটিকে উলটো করে একটি টারম্যাকে (যেখানে বিমান পার্ক করা হয়) রাখা হয়।
রবসন সেই অবস্থায় নিজের মাথা ও ঘাড়ের ওপর ২২ ঘন্টা ভর করে ছিলেন ।
যদিও তিনি কান্টাস থেকে লন্ডনের প্লেন বুক করেছিলেন, কিন্তু ফ্লাইটে জায়গা না হওয়ায় বাক্সটিকে প্যান অ্যাম এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে করে লস অ্যাঞ্জেলসে পাঠিয়ে দেয়া হয়, ফলে আরও দীর্ঘায়িত হয় তার যাত্রা।
'এই ফ্লাইটে ৫ দিন সময় লেগেছিল। সেই যন্ত্রণা ছিল অসহ্য, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি ভেতরে অচেতন হয়ে পড়েছিলাম এবং মনে হচ্ছিলো শূন্যে ভাসছি', বলেন রবসন।
তিনি ভয়ঙ্কর রাত পার করেছিলেন বলেও জানান। তিনি বুঝতে পারছিলেন না কোনটি সত্য আর তার মাথায় কী চলছিল। রবসন প্রচণ্ড ভীত হয়ে পড়েন এই ভেবে যে তাকে হয়তো প্লেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে।
বাক্সের ভেতরে রবসন তার বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন অন্ধকারে এবং নিজের দ্বিধা-যন্ত্রণার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে।
রবসন বললেন সেই বিভীষিকার কথা, 'এক পর্যায়ে ভেবেছিলাম আমি মারা যাচ্ছি, আর আমি চাচ্ছিলাম তাও যেন তাড়াতাড়ি হয়।'
বিমান তার গন্তব্যে পৌঁছানোর পর রবসন ঠিক করলেন তার পরিকল্পনার বাকি অংশ এবার বাস্তবায়ন করতে হবে।
রবসন জানান, 'পরিকল্পনা ছিল রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করা এবং হাতুড়ি দিয়ে বাক্সের একপাশ ভেঙে বেরিয়ে এসে বাড়ি যাওয়া। এটিই ছিল একেবারে মূর্খের মতো পরিকল্পনা।'
কিন্তু নিজের টর্চলাইট বাক্সের ভেতর ফেলে দেওয়ার পরপরই বিমানবন্দরের দুই কর্মীর নজরে আসেন তিনি। বাক্স থেকে আলো বের হচ্ছে দেখার পর তারা স্তম্ভিত হয়ে যান এবং এগিয়ে এসে দেখতে পান ভেতরে একজন মানুষ রয়েছে।
কিন্তু কর্মীদের ভাষার উচ্চারণ শোনার পর কেবল রবসন বুঝতে পারলেন তিনি আসলে আমেরিকা এসে পৌঁছেছেন।
রবসন বললেন, 'সে চিৎকার করতে লাগলো ভেতরে একজন মানুষ আছে এই বলে। কিন্তু আমি কোনো কথা বলতে পারছিলাম না, আমি নড়তেও পারছিলাম না।'
বিমানবন্দরের সেই কর্মী তার সুপারভাইজারের কাছে বিষয়টি জানাতে গেল। কিন্তু এটি যে কোনো নিছক মজা নয় তা বোঝাতে তার একটু সময় লেগেছিল।
বাক্সের ভেতরে থাকা মানুষটি জীবিত এবং তার দ্বারা কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই বোঝার পরই রবসনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ দিন হাসপাতালে কাটাবার পর রবসন সুস্থ হন।
তবে ইতোমধ্যেই রবসনের গল্প চলে যায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তার গল্প।
রবসন প্রকৃতপক্ষে আমেরিকায় এসে পড়লেও তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনা হয়নি।
কর্তৃপক্ষ রবসনকে প্যান অ্যামের কাছে হস্তান্তর করে এবং বিমানে প্রথম শ্রেণির সিটে বসে তাকে লন্ডনে পৌঁছে দেয়া হয়।
অবশেষে ১৯৬৫ সালের ১৮ মে লন্ডনের মাটিতে পা রাখেন রবসন, টেলিভিশন ক্যামেরাগুলো তাকে সেখানে অভিবাদন জানায় ।
রবসন বলেন, 'আমাকে দেখে আমার পরিবার খুশি হয়েছিল ঠিকই, তবে আমার কৃতকর্মের জন্য তারা খুশি ছিলেন না।'
নিজের মা-বাবার সাথে ওয়েলসে ফিরে যাবার আগে রবসন তার পুরো অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে যেতে চেয়েছিলেন।
পুনর্মিলনের আশা
রবসনের এই অভিনব যাত্রার গল্প ছড়িয়ে পরায় তিনি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন।
রবসন জানালেন, এখনো তিনি বাক্সের ভেতরে পার করা সেই কয়েকটা দিনের কথা মনে পড়লে আতঙ্কিত হন, এতোগুলো বছর ধরে তিনি সেসব কথা কাউকে বলতেও পারতেন না।
রবসনের ভাষ্যে এটি তার জীবনের এমন একটি অংশ যা তিনি মনেপ্রাণে ভুলে যেতে চান , কিন্তু ভুলতে পারেন না। তার কাছে এরকম এক বাক্সে বন্দী হয়ে থাকার চেয়ে কফিনে থাকা ভালো, সেখানে অন্তত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়া যায়।
তবে এই ঘটনা রবসনের জীবনে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও এনেছে। রবসন 'দ্য ক্রেট এসকেপ' নামে একটি বই লিখেছেন, যেখানে তিনি নিজের সেই যাত্রার অভিজ্ঞতার বিস্তারিত লিখেছেন। আরো চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে তার এই গল্প থেকে একটি চলচ্চিত্রও হতে যাচ্ছে।
যদিও ১৯৬৫ সালে ওয়েলসে ফেরার পর তিনি জন ও পলকে চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু তিনি জানেন না তারা সেটি পেয়েছিলেন কিনা।
তবে তিনি গ্রেপভাইনের মাধ্যমে খবর পেয়েছেন, তার দুই বন্ধু হয়তো মিডিয়ায় তার গল্প শুনেছেন।
খুব সম্প্রতি রবসন জেনেছেন যে তিনি যদি বেঁচে না ফিরতেন তাহলে হয়তো তার বন্ধুরা অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হতেন।
রবসন বলে, 'আমি তাদেরকে এই অবস্থায় ফেলার জন্যে ক্ষমা চাইতে ইচ্ছুক। কিন্তু নিরপেক্ষভাবে ভাবলে এটা সম্মলিতি প্রচেষ্টাই ছিল। তবুও আমি এ নিয়ে অপরাধবোধ করি।
বিস্তারিত না জানালেও ৭৬ বছর বয়সী রবসন জানালেন যে তিনি দুই বন্ধু সম্পর্কে বেশ ভালো খবরই পেয়েছেন এবং খুব সম্ভবত তাদেরকে খুঁজে পাবেন।
রবসন মনে করেন, পল ও জনের সঙ্গে আবার দেখা হওয়াটা তার এই গল্পের ইতি টানতে সাহায্য করবে যা তিনি আজ অবধি ভুলতে পারেননি।
ব্রিয়ান রবসনের লেখা 'দ্য ক্রেট এসকেপ' বইটি ৩০ এপ্রিল অস্টিন ম্যাকলে প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হবে ।
- সূত্র: সিএনএন