বেঁচে থাকার তাগিদে নিজ শিশুদের খেয়ে ফেলছে মেরু ভালুক
জলবায়ু পরিবর্তন মেরু অঞ্চলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে- এটি নতুন কোনো খবর নয়। কিন্তু এবার এই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে আর্কটিকের মেরু ভাল্লুকের জীবনকে, তাদের নৃশংস করে তুলছে। ক্ষুধার তাড়নায় নিজের বাচ্চাদেরই খেয়ে ফেলছে মেরু ভাল্লুকরা।
মেরু ভাল্লুকরা সবসময়ই এরকম নৃশংস ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত খাদ্য সংস্থানের কারণে কখনো তাদের এই রূপ প্রকাশ পায়নি।
ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা আর আর্কটিকে মানুষের আনাগোনা ক্রমেই বাড়ার ফলে বরফ গলে যাচ্ছে, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই এলাকার বরফ খণ্ডগুলো। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মেরু ভালুকদের খাবারের সংস্থান।
মস্কোর সেভের্তসভ ইনস্টিটিউট অফ ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনের মেরু ভালুক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া মরদ্বিন্টেসেভ বলেন, "মেরু ভালুকরা যে নিজ প্রজাতির মাংস খায় এটা অনেক আগে থেকেই আমরা জানি। এতদিন ব্যাপারটা দেখা যায়নি। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন ধরে তাদের এই 'ক্যানিবাল' আচরণ লক্ষ্য করছি আমরা।"
গবেষকরা বলছেন, তাদের আবাসস্থলে খাদ্য ঘাটতি এর প্রধান কারণ। পুরুষ মেরু ভালুকরা নারী আর শিশু ভালুকদের ধরে শিকার করছে।
সাধারণত, সমুদ্রের বরফের উপর সামুদ্রিক সিল শিকার করে মেরু ভালুকরা। কিন্তু বরফ গলে যাওয়ায় তীরের দিকে সরে আসতে হচ্ছে এদের, যেখানে নেই পর্যাপ্ত শিকার।
এছাড়া মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের আবাস। তরল প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করতে ব্যবহৃত হয় জাহাজগুলো সাধারণত আর্কটিকের এই পথেই চলাচল করে।
এদিকে শিকার করা মৃতদেহগুলো বরফে পুঁতে জমা করছে মেরু ভালুকরা। সাধারণত বাদামী ভালুকদের মধ্যে প্রচলিত খাবার সংরক্ষণ করে রাখার এই পদ্ধতিকে 'ক্যাচিং' বলা হয়। তবে মেরু ভালুকদের মধ্যে এই প্রবণতা এর আগে কখনো দেখা যায়নি বলে জানান রাশিয়ান বিজ্ঞানী ভ্লাদিমির সোকলভ।