মাগুরার আকাশে ৩৪৩ ফুট লম্বা ড্রাগন ঘুড়ি
ক্রিকেট কিংবা ফুটবল, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মাগুরায় সব খেলা বন্ধ। ঘরবন্দি জীবন কাটছে খেলাধুলাপ্রেমি সকল কিশোরের। এ অবস্থায় শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকার মেহেদী হাসান এলিটের মাথায় আসে ভিন্ন কিছু করার ভাবনা। কিন্তু কী করবেন?
এরই মধ্যে ইউটিউব ঘেটে চোখে পড়ে ড্রাগন ঘুড়ির ভিডিও। ইউটিউবের মাধ্যমে এলিট দেখতে পান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ড্রাগন ঘুড়ির দৈর্ঘ্য ৩১৮ ফুট। তখন সিদ্ধান্ত নেন, এর চেয়েও বড় ড্রাগন ঘুড়ি বানাবেন।
পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে আলাপও করেন। ইতিবাচক সাড়া পান। তারপর শুরু হয় কর্মযজ্ঞ।
দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ১৫ জন বন্ধু মিলে কাপড়, বাঁশ, রঙসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করেন ৩৪৩ ফুট লম্বা ড্রাগন ঘুড়ি। এ ঘুড়ি বানাতে খরচ হয়েছে ৪৩ হাজার টাকা। এর পর বুধবার বিকেলে মাগুরা মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে তাদের ফুটবল গুরু সৈয়দ বারিক আনজাম বারকির উপস্থিতে সফলভাবে আকাশে ওড়ান 'বিশ্বের সবচেয়ে বড়' ড্রাগন ঘুড়ি। যা দেখতে স্টেডিয়াম মাঠে ভিড় করে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ।
মেহেদী হাসান এলিট বলেন, ঝোঁকের মাথায় সিদ্ধান্ত নিলেও, পরে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে থমকে গিয়েছিলাম। কিন্তু বারকি ভাইয়ের সাহস ও বন্ধুদের সহযোগিতায় আড়াই মাসের মধ্যে ঘুড়িটি বানাতে সক্ষম হই।
এত কিছুর পরও তিনি তৃপ্ত ছিলেন না। বুধবার বিকেলে যখন এই ঘুড়ি আকাশে ওড়ে, তখনই তিনি তৃপ্তির হাসি হাসেন।
এলিটের দাবি, ইউটিউব থেকে তিনি যে তথ্য পেয়েছেন, সেখানে সবচেয়ে বড় ড্রাগন ঘুড়ির দৈর্ঘ্য ৩১৮ ফুট। তিনি ৩৪৩ ফুট ড্রাগন ঘুড়ি বানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে 'এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘুড়ি' বলে তিনি দাবি করেন।
ড্রাগন ঘুড়ি ওড়ানো দেখতে আসা কিশোর আশিকুর জানায়, সে করোনার কারণে অনেকদিন ঘরে বন্দি অবস্থায় দিন কাটিয়েছে। কিন্তু স্টেডিয়াম মাঠে এসে এত বড় ড্রাগন ঘুড়ি দেখে তার প্রাণ জুড়িয়েছে।
আতিকুর রহমান নামে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, তিনি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ড্রাগন ঘুড়ি ওড়ানো দেখতে এসেছেন। করোনার মধ্যে বন্দি জীবনে এত বড় ঘুড়ি দেখে ছেলে-মেয়েরা খুশি হয়েছে। তিনি নিজেও অভিভূত।
বিকেএসপির সাবেক ফুটবলার, মাগুরার ক্রীড়া সংগঠক ও ইয়াং স্টার ফুটবল একাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বারকি বলেন, করোনার কারণে খেলাধুলা ছেড়ে মাঠের ছেলেরা আজ ঘরে। ঘুড়ি বা ঘুড়ি উৎসব বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। তাদের এ প্রচেষ্টাকে তিনি সাধুবাদ জানান।