এবার আইসিইউ না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বার করুণ মৃত্যু
চট্টগ্রামে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) শয্যা না পেয়ে এবার এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ করেছে পরিবার। মুক্তা আকতার (৩০) নামে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারী মঙ্গলবার (৯ জুন) দিবাগত রাত ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল করোনা ইউনিটে মারা গেছেন।
ওইদিন সকালে তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও আইসিইউ শয্যা খালি না থাকায় মুক্তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলেও শয্যার অভাবে মুক্তাকে আইসিইউতে রাখা সম্ভব হয়নি।
মুক্তার ভাই সোলাইমান রনি বলেন, আমার বোন ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে আমরা তাকে বেসরকারি আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ চিকিৎসকরা জানান, আমার বোনের আইসিইউ সুবিধা লাগবে। নয়তো রোগীকে বাঁচানো সম্ভব না। কিন্তু মা ও শিশু হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি নেই উল্লেখ চিকিৎসকরা অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে বলেন। এরপর আমার বোনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানেও আইসিইউতে শয্যা মেলেনি।
তিনি আরও বলেন, পরে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতাল, ন্যাশনাল হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে সবাই আইসিইউতে শয্যা খালি নেই বলে জানান। করোনা সন্দেহে কোনো হাসপাতাল আমার বোনকে ভর্তি নিতে রাজি হয়নি। পাশাপাশি চমেক হাসপাতাল চিকিৎসকরা শ্বাসকষ্ট অবস্থায় রোগীর অস্ত্রোপচার করে বাচ্চার প্রসব করাতে রাজী হয়নি। পরে শ্বাস নিতে না পেরে রাত ৪টার দিকে আমার বোনের মৃত্যু হয়। বুধবার দুপুর ১১টার দিকে ফৌজদারহাটে শ্বশুরবাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
চমেক হাসপাতাল গাইনি বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, ঘটনা শুনে মনে হচ্ছে ওই নারীর চিকিৎসায় অবহেলা ছিলো না। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল না হলে অস্ত্রোপচার করানো সম্ভব হয় না। তাই হয়তো চিকিৎসকরা ঝুঁকি নেননি। অস্থিতিশীল অবস্থায় অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে রোগী মারা গেলে স্বজনরা ডাক্তারের দোষ দিতো।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, আইসিইউ সুবিধা না পাওয়াতে ওই নারী হয়তো মারা গেছেন। কিন্ত আইসিইউতে সবসময় মুমূর্ষু রোগী রাখা হয়। ফলে কাউকে বের করে অন্য রোগী দেওয়া সম্ভবও হয় না। কারণ আইসিইউতে সবার অবস্থা খারাপ থাকে। সুস্থ অথবা মারা না গেলে আইসিইউতে শয্যা পাওয়া মুশকিল।
এর আগে মঙ্গলবার তিন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে গাড়িতেই মারা গেছে নগরের বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছগির। করোনা সন্দেহে তাকে কোনো হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি।