ক্ষতিগ্রস্তকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার শর্তে প্রবেশন পেয়েছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি
অভিযোগকারীকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার শর্তে প্রবেশন পেয়েছেন প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি। কক্সবাজারের চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজীব কুমার দেব গত ২৩ নভেম্বর ব্যতিক্রমী এই রায় ঘোষণা করেন। চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও এপিপি এ্যাডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ পেকুয়া ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার বাসিন্দা কফিল উদ্দিন একই এলাকার রেজিয়া বেগম থেকে ২০ শতক জমি কিনতে পাঁচ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দর নির্ধারণ করে। ওইদিন ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে জমির কবলা ও রেজিস্ট্রি সম্পাদিত হয়। বাকি টাকা এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প সম্পাদিত হয়।
পরে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই টাকা ফেরত চাইলে সমস্ত লেনদেন অস্বীকার করেন রিজিয়া বেগম। এরপর কফিল উদ্দিন পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৪০৬ এবং ৪২০ ধারায় ফৌজদারী অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি অভিযোগটি আমলে নেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেব।
গত ২৩ নভেম্বর ঘোষিত মামলার রায়ে অভিযুক্ত রিজিয়া বেগমকে ছয় মাসের কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। ছয়মাসের কারাদন্ডের বিপরীতে আট শর্তে আসামিকে এক বছরের প্রবেশন দেয়া হয়।
প্রবেশনের শর্তানুসারে সাজাপ্রাপ্ত আসামি- আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগকারীকে ক্ষতিপূরণ ও খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করবেন। এছাড়া অভিযোগকারী ও তার পরিবারের সদস্যদের আগামী রমজানে একটি করে কোরান শরীফ ও ইদুল ফিতরে জামা দিতে হবে। রমজানে ৬দিন দাওয়াত দিয়েও খাওয়াবেন। তাছাড়া, অভিযোগকারীর সন্তানদের এক বছরের স্কুলের টিউশন ফি ও অন্যান্য শিক্ষা সামগ্রী দিতে হবে।
অভিযোগকারীর বসতভিটায় মানসম্মত একটি টয়লেট নির্মাণ করতে হবে। ২ টি বনজ ও ফলজ বৃক্ষের চারা রোপণ করতে হবে। এবং অভিযোগকারীর পুকুরে ১৫ কেজি বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়তে হবে।
তিন মাস পরপর প্রবেশনের শর্ত প্রতিপালন ও অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে ছয়মাসের কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।