ঢাকায় ৫২৭ কোটি ডলারের প্রথম সাবওয়ে প্রকল্প দ. কোরিয়ার অনুমোদনের অপেক্ষায়
টঙ্গি থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ঢাকা মহানগরকে ভূগর্ভস্থ রেল-সংযোগের আওতায় আনতে পিপিপি'র মাধ্যমে ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রেলপথ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পিপিপি (সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্ব) কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পে অর্থায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মোট প্রকল্প খরচ ধরা হয়েছে ৫২৭ কোটি ডলার, যার আওতায় মোট ২৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১১টি সাবওয়ে রেলপথ তৈরি হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে আগামী ৩০ বছর সময় লাগবে বলে এ সংক্রান্ত সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পিপিপি কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বাংলাদেশ-কোরিয়া জয়েন্ট পিপিপি প্লাটফর্মের বৈঠক ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সহ-আয়োজক ছিল কোরিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (কেআইএনডি)। ওই বৈঠকেই সাবওয়ে প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া, মৌলভিবাজারে জেলার শ্রীমঙ্গলে কোরিয় অর্থায়নে বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও আবাসন কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গত শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রস্তাবের বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করে পিপিপি কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে দ. কোরিয়ার পক্ষ থেকে 'পূর্বাচল নগর বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পে'র আওতায় ভূগর্ভস্থ সংযোগ লাইন নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকের সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) ভোলা থেকে আড়াইহাজার ও বাঞ্ছারামপুর সড়কে মেঘনা নদীর উপর চার লেনের একটি সেতু তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছে। সেতুটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা- চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের একটি বিকল্প সড়ক সংযোগ স্থাপিত হবে। কেআইএনডি এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে প্রকল্প সংক্রান্ত কাজ এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণকারী কোরিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কনসোর্টিয়ামের আওতায় রয়েছে; কোরিয়া ওভারসিজ ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট কর্প (কেআইএনডি), দাইয়ু ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন এবং কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্প। কনসোর্টিয়ামের আওতায় সেতু প্রকল্পের সম্ভাবনা যাচাই এবং প্রকল্প উন্নয়নের নির্মাণের স্বত্ব সংরক্ষণ করবে কোরিয় সরকার।
চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশ মন্ত্রীপরিষদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক কমিটি যেসব নীতিমালার আলোকে প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে- তা পিপিপি'র মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে টোল আদায়ের মাধ্যমে খরচ ওঠানো হবে। মোট খরচ ধরা হয়েছে শত কোটি মার্কিন ডলার। এর মাধ্যমে ঢাকা, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সঙ্গে ভারতের আগরতলা হয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এবং ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মধ্যে সহজে এবং দ্রুত যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
বাংলাদেশে এপর্যন্ত তিনটি মেগা প্রজেক্টের অগ্রাধিকার স্বত্ব পেয়েছে কোরিয় কোম্পানিগুলো, যার সার্বিকমূল্য ৯২০ কোটি ডলার। এরমধ্যে গত জানুয়ারিতে ঘোষিত ঢাকা সার্কুলার রেলওয়ে প্রজেক্টও রয়েছে।