প্রথমবারের মতো করোনায় একদিনে পুরুষের দ্বিগুণ নারীর মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে আরও ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের কারণে গত দুইমাস টানা শতাধিক মৃত্যু হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা কমেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫৬ জনের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী। যা প্রথমবারের মতো দেশে একদিনে করোনায় পুরুষের দ্বিগুণ নারীর মৃত্যুর ঘটনা।
দেশে সংক্রমণের শুরু থেকে দেশে করোনায় পুরুষের চেয়ে নারীদের মৃত্যু কম ছিলো। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের পর আগস্ট মাস থেকে নারীর মৃত্যু বাড়ছে।
১২ আগস্ট প্রথমবারের মতো নারী মৃতের সংখ্যা পুরুষকে ছাড়িয়ে যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ওই দিন ১০৮ জন নারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর সাতদিন পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুর সংখ্যা বেশি ছিলো।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট এবং করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, "ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে এ বছর করোনায় নারীর মৃত্যু বাড়ছে। এছাড়া আমাদের দেশে আর্থ-সামাজিক কারণে নারীদের মধ্যে চিকিৎসা নেয়ার হার কম। ভ্যাকসিনেশনেও পিছিয়ে নারীরা। এসব কারণে নারীর মৃত্যু বাড়ছে। নারীদের মধ্যে কোমর্বিডিটি বেশি নাকি অন্য কারণে মৃত্যু বাড়ছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে"।
তিনি বলেন, "করোনায় মৃত্যু কমাতে ৫০ বছরের বেশি বয়সী সব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। এছাড়া শতভাগ মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সংক্রমণ কমছে তাই মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা বাদ দেয়া যাবেনা"।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ২৩৩টি কোভিড পরীক্ষার বিপরীতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে শতকরা ৯ দশমিক ৬৯ জনের মধ্যে। বিগত কয়েক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে কমতে কমতে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৬,৬৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৭, ২৩৯ জন ও নারী ৯৪৪৫ জন। মোট মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৪.৬০% পুরুষ ও ৩৫.৪০% নারী। এক মাস আগে ৬ আগস্ট মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৬.৯২% পুরুষ ও ৩৩.০৮% ছিল নারী।