প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী শুরু বিশেষ টিকা কার্যক্রম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী ৭৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। ২৫ বছরের বেশি বয়সী যারা আগেই টিকার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন তাদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে । টিকাদানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।
এছাড়া গতকাল (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টিকা কর্মসূচি বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, "মঙ্গলবার আমরা ক্যাম্পেইনের আওতায় ৭৫ লাখ টিকা দেব বলে ঠিক করেছি এবং একইদিন নিয়মিত টিকাদান হবে আরও ৫ লাখ জনের, সবমিলিয়ে এ দিন ৮০ লাখ ডোজ টিকা আমরা দিতে পারব। প্রতিটি ইপিআই সেন্টার থেকে যা মালামাল দরকার তা সরবরাহ করা হয়েছে"।
তিনি আরও বলেন, "মঙ্গলবার যে গণ-টিকাকরণ হবে, তাতে শুধু প্রথম ডোজের টিকা দেব এবং একইভাবে আগামী মাসের ২৮ তারিখে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেব। আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় না পৌঁছানো পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে টিকাদান চলবে। শেষ টিকা প্রদানের পর আমাদের টিম এক ঘণ্টা অবস্থান করবে। স্থানীয়ভাবে টিকাদানের সময় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে। কোনোভাবেই আমাদের ইপিআই সেশনের টিকা দেওয়া বন্ধ রাখা যাবে না"।
মহাপরিচালক বলেন, "ক্যাম্পেইনে আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করা নির্ধারিত জনগোষ্ঠী ২৫ বছর বয়সী বা তদুর্ধ্ব তাদের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়ে টিকা দেব। আমরা চল্লিশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেব। বয়স্ক, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও বিবেচনায় রাখব। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েরা এ ক্যাম্পেইনের আওতায় টিকা পাবে না"।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়নে কোনো একটি ওয়ার্ডের- একটি কেন্দ্রে তিনটি বুথ, পৌরসভার প্রতিটি কেন্দ্রে একটি বুথ, সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের ৩টি বুথের মাধ্যমে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হবে। সারা দেশে আগে থেকে যেসব কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি চলছিল সেগুলো অব্যাহত থাকবে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫০০ বা তার বেশি, পৌরসভা পর্যায়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ বা এর বেশি এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ হাজার বা তদুর্ধ্ব মানুষকে টিকা দেওয়ার জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে স্থানীয় প্রশাসন এটি কমাতে বা বাড়াতে পারবে।
এর আগে ৭-১২ আগস্ট প্রথম টিকাদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। সে সময় ৬ দিনে ৫০ লাখ ৭৩ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়। তাদের সেপ্টেম্বরে ক্যাম্পেইন করে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ ও দুই ডোজ টিকাই পেয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখের বেশি মানুষ।
ক্যাম্পেইনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে টিকা পাবে ১ লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষ।
আজকের ক্যাম্পেইনের একজন টিকাপ্রার্থী মো. মুনজুরুল আলম টিবিএসকে বলেন, "লাইনে দাঁড়ানোর ২০ মিনিটের মধ্যেই আমি টিকা নিতে পেরেছি কারণ এখানে আগের মতো এত চাপ নেই।"
একটি টিকাকেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বরত মো. সামিউল ইসলাম বলেন, "৬০ বছরের ঊর্ধ্বে যে কেউ আজ এনআইডি কার্ড দেখিয়ে টিকা নিতে পারবেন কিন্তু যাদের এখনও নিবন্ধনই করা হয়নি তারা আজ টিকা পাবেন না।"
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাতিরপুল টিকাকেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে টিকা নিতে আসা সবাইকেই টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে।