ব্যবসার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালকে ভ্যাকসিন দেবেনা সরকার: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
বিক্রির জন্য সরকারের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন চেয়েছিলো প্রাইভেট হাসপাতালগুলো। তবে ব্যবসার জন্য প্রাইভেট সেক্টরকে সরকার কোন ভ্যাকসিন দেবেনা। প্রাইভেট সেক্টর ভ্যাকসিন আমদানি করে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে পারবে, তবে সেক্ষেত্রে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দেবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বেসরকারি খাত দেরিতে হলেও এগিয়ে এসেছে। তারা সহযোগিতা না করলে আমাদের পক্ষে এ ভাইরাস মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হতো। সেজন্য তাদের প্রতি অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে যেসব কথাবার্তা হয়েছিল, তার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এখন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ভ্যাকসিন আমদানি করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা কত দামে ভ্যাকসিন আনবে, কত দামে বিক্রি করবে, কীভাবে কী করবে- সব নির্ধারণ করে দেবে সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এমএ মুবিন খান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, "সরকারের মজুদে এখন ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন রয়েছে, আগামী মাসে আরো ৫০ লাখ ডোজ আসবে। আমাদেরকে ১০ লাখ ডোজ দিলে আমরা তার জন্য নিজেরা মূল্য পরিশোধ করে দেব"।
তিনি জানান, স্বচ্ছল এবং ধনীরা এসে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো থেকে টিকা নেবেন। সরকার প্রয়োজনে এ হাসপাতালগুলোতে টিকাগ্রহণের মূল্য নির্ধারণ করে দেবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেসময় হাসপাতালের মালিকদের তাদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।
এদিকে সরকার আগে শিক্ষক ও পরে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে নিবন্ধিত শিক্ষকদের ডাটা চাওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষকদের টিকা দিতে বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকরাও ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। ভ্যাকসিন নিবন্ধনের সুরক্ষা অ্যাপে 'শিক্ষক' নামে নতুন ক্যাটাগরি করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে এখনো কোনো ক্যাটাগরি করা হয়নি।
সময়মতো সব ভ্যাকসিন আসবে। ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক।
টিকা নিলেন ৩২ লাখ
সারা দেশে করোনাভাইরাস টিকা দেওয়ার ১৯তম দিনে গতকাল সোমবার (০১ মার্চ) টিকা নিয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার মানুষ।
গত ৭ই ফেব্রুয়ারি গণ টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের পর এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৮২৫ মানুষ।
সোমবার টিকা গ্রহণ করা এক লাখ ১৬ হাজার ৩০০ জনের মধ্যে পুরুষ ৬৯ হাজার ৬৩৫ জন এবং নারী ৪৬ হাজার ৬৬৫ জন।
গতকাল টিকা নেয়ার পর ২১ জনের মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত মোট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ৭৫৪ জনের। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৪৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৯২ জন।