‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি জনজীবনে কষ্ট বাড়িয়ে তুলছে’
বিদ্যুতের সংকট যে দেশকে আবার ২০০৬-০৭ সালের অবস্থায় নিয়ে গেছে, তার জন্য মূলত সঠিক পরিকল্পনার অভাব দায়ী। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি পরিবহন ও উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে জনজীবনে কষ্ট বাড়িয়ে তুলছে।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত 'নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: জনজীবনে চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক সংলাপে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, "বিদ্যুৎ যাওয়া আসার যে সংকটটা ২০০৬-০৭ সালে ছিল, এখন আবার আমরা সেই পর্যায়ে নেমে গেছি। সে সময়ে সংকট উত্তরণে সরকার বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছিল রেন্টাল, কুইক রেন্টাল করে, তখনকার জন্য ভালো ছিল।"
"কিন্তু যখন এগুলো বন্ধ করে বড় উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনে মনোযোগী হওয়া উচিত ছিল সেটা হয় নাই। অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ না নিয়েই টাকা দিতে হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "গ্যাসের উন্নয়নে কোন সরকারই পদক্ষেপ নেয়নি, সবাই আমদানিতে গুরুত্ব দিয়েছে। গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার হয়নি। অনুসন্ধান না করে এলএনজি আমদানি করা ছিল দূরদর্শীতার অভাব।"
যে কারণে এখন তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন ও উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে। জনজীবনে ভোগান্তি বাড়ছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক অরুণ কর্মকার। এতে বলা হয়, সরকারের চলতি ব্যয় মেটানোর মত অর্থের ঘাটতি পড়েছে। বিপিসির হাতে আগস্ট মাসের পর তেল কেনার টাকা নেই বলেই এই দাম বাড়ানো হয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে আমজনতার উপর। চাল, ডাল, তেল, মাছ, নুন, তরকারি থেকে সব জিনিসের দাম বাড়ছে। অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে, যা দ্রুতই দুই অঙ্কের ঘরে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রিয়াজুল হক বলেন, "সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করায় কৃষকের খরচ বেড়েছে। জুলাইয়ে রেকর্ড কম বৃষ্টিপাতের কারণে সেচ ইঞ্জিন বসাতে হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে ধান কমিয়ে বছরে তিনবার ভুট্টা উৎপাদনে যাচ্ছে কৃষক। এটা খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে।"
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, "এখন ফুয়েলের দাম বাড়ানোর পর ইনফ্ল্যাশন আমদানি করে আনার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ইনফ্ল্যাশন আমদানি করা হয়নি, বাই ফোর্স এখানে ঢুকেছে। শুধু এখানে না, সব জায়গায়, সব দেশে ঢুকেছে। বরং আমাদের এখানে আরও কম ঢুকছে।"