‘গতকাল রাতে যে হাসিমুখে বাড়ি গেছে, আজকে সকালে এসে ফুটপাতে বসে কাঁদছে’
ব্যবসায়ীদের যে পরিমাণ ক্ষতি হলো এই ক্ষতি পুষিয়া নেওয়ার মতো অবস্থা নেই বলে উল্লেখ করেছেন নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।
"ঈদের আগে কোন ব্যবসায়ী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। গতকাল রাতে যে হাসিমুখে বাড়ি গেছে আজকে সকালে এসে ফুটপাতে বসে কাঁদছে। ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ," বলেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম শাহীন এ অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ জানিয়ে বলেন, "যে মার্কেটের তিনতলায় আগুন লেগেছে সেটি সেন্ট্রাল এসি করা। এতে ডার্ক সিস্টেম করে জিপসাম বোর্ড দিতে হয়েছে। আমার ধারণা, আগুন যেখানে লাগুক না কেন, জিপসাম বোর্ডের কারণে দ্রুত পুরো মার্কেটে তা ছড়িয়ে পড়েছে।"
আগুনের ব্যাপকতা এখন পর্যন্ত আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, "আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের দল চলে আসে এই নিউমার্কেট এলাকায়। আমাদের মার্কেটের যে আগুন নেভানো যন্ত্রগুলো ছিল সেগুলো নিয়ে চেষ্টা করা হয়, পাশাপাশি নিউ মার্কেটের যে মসজিদ সেখানে বড় একটি রিজার্ভ ট্যাংক আছে, এখনো সেই পানি দিয়ে কাজ চলছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যাতে আগুন কোন দিকে ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বিশেষ করে রোজার শেষ দশ দিনে সবচেয়ে ভালো বেচাকেনা হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা কিন্তু এই রোজার ঈদকে টার্গেট করে ব্যবসা করে থাকেন।"
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "এই সময় এসেই ব্যবসায় বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা লোন করে থাকেন। অন্য সময়ে কোন ব্যবসায়ীর যদি দিনে দুই থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়, এই সময়ে বেচা কেনা হয় কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত।"
তিনি আরো বলেন, "ব্যবসায়ীরা এ সময়ে খুব কম টাকাই বাসায় নিয়ে থাকেন। কারণ দোকান বন্ধ করতে করতে রাত বারোটা একটা বেজে যায়। ওই সময় কেউ রিস্ক নিয়ে সারাদিনের বেচাকেনার লাখ টাকা বাসায় নিয়ে যেতে চান না।"
"ফলে আমরা ধারণা করছি অনেকেরই টাকা ভেতরে অর্থাৎ দোকানের ক্যাশ বক্সে ছিল," যোগ করেন তিনি।
আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেটের তৃতীয় তলার একাংশে আগুনের সূত্রপাত হয়।
প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ১০ মিনিটের দিকে সে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপক দলসহ মোট ৩০টি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট।