চট্টগ্রামে ৩টি, সাভার, মুগদায় পুড়ল আরও দুটি বাস
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনব্যাপী অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজ সাভার, মুগদা, চট্টগ্রামে ফের যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এরমধ্যে, আজ (১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে মুগদা মেডিকেল কলেজের সামনের মিডলাইন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ১১টা ১০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে, সাভারের বলিয়ারপুর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রিমি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা। আজ ভোর ৬টায় বলিয়ারপুরের মধুমতী মডেল টাউনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে, সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার ভেল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায়ও একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সকাল আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ জহির হোসেন বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নামিয়ে দিয়ে বাসটি কর্ণফুলী থেকে পটিয়ার দিকে যাচ্ছিল। সামনে অবরোধকারীদের দেখে বাসটি ফিরে আসার চেষ্টা করে। বাসের চালক ও সহকারী দ্রুত নেমে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। অবরোধকারীরা বাসটি আটকিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়।, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দ্রুত এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাট সিএন্ডবি এবং পুরাতন চান্দগাাঁও থানা এলাকায় দুটি মেট্রো প্রভাতি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে যান চলাচল প্রথম দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। গণপরিবহনের পাশাপাশি, হিউম্যান হলার, টেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, সহ অন্যান্য যানবহনের চলাচলও বেড়েছে।
অবরোধের প্রথম দিনে গাড়ির মালিক, শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক থাকলেও এখন কিছুটা কমে এসেছে। তবে অবরোধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গণপরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুন কিংবা তার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি রুট ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে।
মিনি বাসে উঠানামা ১০-২০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে বাস শ্রমিকরা। অফিসগামী যাত্রীরা বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। যাত্রীদের অভিযোগ বিভিন্ন রুটে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিনগুন ভাড়া আদায় করছেন হেলপাররা। বিভিন্ন রুটে যাত্রীদের ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা, ৭ টাকার ভাড়ায় ১৫ টাকা আর ১৫ টাকার ভাড়ায় গুনতে হয়েছে ৩০ টাকা।
অক্সিজেন মোডে অফিসগামী যাত্রী হুমায়ুন কবির বলেন, নিউ মার্কেট যওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এই রুটে মিনি বাসের ভাড়া ১২ টাকা। অবরোধের অজুহত দেখিয়ে তারা মুরাদপুর পর্যন্ত যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। উঠানামা ১০ টাকা দাবি করছে। অথচ অক্সিজেন থেকে মুরাদপুরের ভাড়া ৫ টাকা। নিউ মার্কেট পর্যন্ত যেতে গাড়ি পরিবর্তন করা ছাড়া উপায় নেই। ভাড়াও দিতে হবে দ্বিগুণ।
যাত্রীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে হেলপারার জানিয়েছেন, তারা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন। গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। সেই হিসেবে আমরা কিছু টাকা বাড়তি নিচ্ছি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন টিবিএসকে বলেন, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে নগরীতে যান চলাচল প্রায় স্বভাবিক। মেনটেইনেন্সর জন্য কিছু গাড়ি ওয়ার্কশপে রয়েছে। অবরোধের প্রথম দিনে যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলেও আজ ( বুধবার) আমরা নির্দেশনা দিয়েছি যাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা না হয়।