ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: পায়রা-মোংলায় ৭, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বন্দরে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত
ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি' উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ইতিমধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে সাত (০৭) নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ছয় (০৬) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার শেষ রাত নাগাদ ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'তে রূপ নিয়ে শুক্রবার দুপুরের পরে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মোঃ বজলুর রশীদ বৃহস্পতিবার টিবিএসকে বলেন, "এবারের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি খুব বেশি শক্তিশালী নয়। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এমনটিও ঘটতে পারে যে উপকূলে আঘাত হানার আগেই দুর্বল হয়ে যেতে পারে।"
'মিধিলি' নামটি মালদ্বীপের প্রস্তাব করা। এটি খেপুপাড়া ও মোংলার মাঝামাঝি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে এগিয়ে ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে পরিণত হয়েছে।
এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ১১টি জেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।জেলাগুলো হলো বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও চট্টগ্রাম।
তিনি আরও বলেন, "এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করে আমরা আশা করছি, এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আগামীকাল (শুক্রবার) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত আনতে পারে।"
তিনি বলেন, "গত মাসে ঘূর্ণিঝড় হামুনের সময় উপকূলীয় জেলাসমূহে বরাদ্দ দেওয়া চাল, শুকনা খাবার, গোখাদ্য, শিশু খাদ্য ও অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলাম। সেসব বরাদ্দ মজুদ আছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন, খরচ করবেন। আরও প্রয়োজন হলে আমাদেরকে জানালে আমরা সাথে সাথেই ব্যবস্থা করে দিব।"
কত সংখ্যক মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, জানতে চাইলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, "সঠিক সংখ্যাটা বলা কঠিন। যেহেতু এটি ক্যাটাগরি-১ ঘূর্ণিঝড় তাই ঝুঁকির পরিমাণ কম। তাই আমরা একেবারে উপকূলবর্তী যারা বাস করে তাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করব।"