চট্টগ্রামে বন্যায় কৃষিখাতে ক্ষতি ৩৯৪ কোটি টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত ১.৬১ লাখ কৃষক
চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক বন্যায় ২৩ হাজার ৯৯১ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে কৃষিখাতে ৩৯৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭১ হাজার কৃষক।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের করা সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় জেলার ১৫ উপজেলা ও নগরীর আংশিক অংশে আমন–আউশ ও শরৎকালীন সবজিক্ষেতের ক্ষতির তালিকা থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান টিবিএসকে বলেন, "এখনো অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। অনেক উপজেলায় আউশ–আমন ও আমনের বীজতলা ডুবে আছে। এসব এলাকা থেকে পানি সরে গেলে মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।"
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মৌসুমে ১ লাখ ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৪৫ হাজর ২২২ হেক্টর জমির ফসল বন্যা আক্রান্ত হয়। এতে, ১৩ হাজার ৮৩১ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ৩১ হাজার ৩৯১ হেক্টর জমির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যায় চট্টগ্রামে শুধুমাত্র রোপা আমনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হন ৭৫ হাজার ৫৪০ কৃষক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৪ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমিতে চাষ করা রোপা আউশের মধ্যে ৮ হাজার ৯৩৯ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে তলীয়ে যায়। এরমধ্যে ৮৮৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ও ৮ হাজর ৫০ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে, ২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন ২৩ হাজার ৬৭৪ কৃষক।
শরৎকালীন সবজির ৫ হাজার ৭০ হেক্টর জমির মধ্যে ১ হাজার ২৩৮ হেক্টর জমির সবজি সম্পূর্ণ ও ১ হাজার ৩৪ হেক্টর জমির সবজি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ১০৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার আর্তিক ক্ষতির সম্মুখীন হন ২২ হাজার ৬৫০ কৃষিক পরিবার।
এছাড়াও, ৭৯৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে ৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।
আরো যেসব কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে আদা চাষে ৯৫ লাখ টাকা, হলুদ চাষে ৯৪ লাখ টাকা, আখ চাষে ৬৫ লাখ টাকা, ও পান চাষে ৬৫ টাকা রয়েছে।
এবারের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা অনেক কষ্ট হবে বলে জানান বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সামনে আউশ ধান কাটার জন্য কৃষকরা প্রস্তুতি নিলেও বন্যায় আউশের প্রায় সব ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে।