ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ: পৃথক সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে সাদ ও জুবায়ের পন্থিরা
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছেন তিনজন। গতকালের ঘটনার সার্বিক বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান পরিষ্কার করতে রাজধানীর পৃথক স্থানে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে সাদ পন্থি ও জুবায়ের পন্থিরা।
সাদপন্থীদের সাংবাদিক সম্মেলন আজ বেলা আড়াইটায়। তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের তৌহিদুর রহমান সোহেল এ তথ্য জানান। আজ দুপুর আড়াইটায় ঢাকার মিরপুর-১ এর কিয়াংশী চাইনিজ রেস্টুরেন্টে (১৮ দক্ষিণ বিশীল, দারুস সালাম রোড) এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
অপরদিকে, রাজধানীর গুলশানের লেক ভিউতে জেস্টি কিচেনে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের পন্থি) অনুসারীরা। সেখানে বিস্তারিত ব্রিফ করা হবে বলে জানিয়েছেন শুরায়ী নেজামের (জুবায়ের পন্থি) গণমাধ্যম সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান।
গতকালের ঘটনায় নিহতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত উসমান মিয়ার ছেলে আমিনুল হক ওরফে বাচ্চু মিয়া (৭০)। ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০), অপরজন হলেন বগুড়া জেলার তাজুল ইসলাম (৭০)।
এদিকে, গতকাল বিকালের পর থেকে সাদ অনুসারীরা ময়দান ছাড়তে শুরু করেন। তারা রাতেই ময়দান ছেড়ে কামারপাড়া এলাকার মার্কাজ মসজিদে গিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমানে মাঠ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া সেনাসদস্য, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, "ইজতেমা ময়দানে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা তিনজনের মরদেহ পেয়েছি। তাদের আমরা ময়নাতদন্ত করেছি। এরমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে দুই জনের এবং গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
জুবায়ের পন্থি হাবিবুল্লাহ রায়হান এ বিষয়ে বলেন, গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হামরায় নিহত ভাই আমিনুল হক ওরফে বাচ্চুর মিয়ার নাম ভুলে আমিনুল ইসলাম ও বাচ্চু মিয়া বলে দুই বার উচ্চারণ করায় একজনকে দুই জন বলা হয়েছে। আসলে আমিনুল হক ও বাচ্চু মিয়া একই ব্যক্তি, দুই ব্যক্তি নয়। ফলে নিহতের সংখ্যা চার নয় তিন।
তিনি আরও জানান, আমাদের কেউ মাঠে নেই। তবে মাঠের টিনসেড মসজিদ আমরা ও তুরাগের পশ্চিম পাড়ে বেলাল মসজিদ সাদপন্থিরা সারা বছর ব্যবহার করতে পারবে বলে সরকারি সিদ্ধান্ত আছে। তাই আমরা মাঠে নেই মসজিদে আছি।
শুরায়ী নেজামের (জুবায়ের পন্থি) গণমাধ্যম সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান নিহতদের সবাই শুরায়ে নেজামের সদস্য দাবি করেছেন। অপরদিকে, সাদপন্থী অংশের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী মো. সায়েম একজন তাদের অনুসারী বলে দাবি করেছেন। তবে, সরকারিভাবে এ বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের (সাদ পন্থি) বিশেষ গণমাধ্যম সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান সোহেল বলেন, "ইজতেমার ঘটনার আসল উদ্দেশ্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তারা প্রকৃত অপরাধীদেরকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। এই বিষয়ে সঠিক তথ্য ও টঙ্গী ময়দান আবারো জুবায়ের পন্থিদের বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি।"