নগদের কার্যক্রমে দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থার নির্দেশ হাইকোর্টের
দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ-এর সকল কার্যক্রমের ওপর আগামী দুই সপ্তাহের জন্যে 'স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এই আদেশের ফলে আগামী ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ দেওয়া প্রশাসক এবং তার সহযোগী অথবা ব্যবস্থাপনা বোর্ড নগদের ব্যবসা পরিচালনা সংক্রান্ত স্বাভাবিক কার্যক্রম ছাড়া আর নতুন কোনো কার্যক্রম বা পদক্ষেপ নিতে পারবে না। আগামী ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠানের পর হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় দেবেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনের প্রতিপালন না করা এবং এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. সাফায়েত আলমের দায়ের করা রিট পিটিশানের পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের পরিচালক, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নগদে নিযুক্ত প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে বিবাদী করা হয়।
বুধবারের শুনানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি স্থগিত রাখার জন্যে আবেদন দিলেও তা গ্রহণ করেননি হাইকোর্ট।
নগদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির স্থিতাবস্থার জন্যে আবেদন করেন এবং হাইকোর্ট সেই আদেশ দেন।
এর আগে মো. সাফায়েত আলমের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির রিট পিটিশন দায়ের করলে প্রাথমিক শুনানি শেষে এ বিষয়ে সরকারকে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
সেখানে হাইকোর্ট জানতে চান নগদ-এ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না। পরে এ বিষয়ে কয়েক দফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ২১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক নিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
একই সঙ্গে আরও ছয়জনকে প্রশাসকের সহকারী হিসেবেও নগদে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনা বোর্ড ভেঙে নতুন করে বোর্ড পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ব্যাংক 'পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন ২০২৪'- সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে।
আইনে প্রশাসক নিয়োগ বা বোর্ড পুনঃগঠনের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হলেও তা প্রতিপালন করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সে কারণেই রিট দায়ের করে আদালতের কাছে প্রতিকার চান নগদের পরিচালক মো. সাফায়েত আলম।