স্বতন্ত্র বিচার বিভাগ ও বিচারপতি নিয়োগ কাউন্সিল গঠন দ্বারপ্রান্তে: সুপ্রিম কোর্ট
বিচার বিভাগ স্বতন্ত্রীকরণের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ১২ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের উদ্দেশে দেওয়া অভিষেক বক্তব্যে এবং ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি ও জেলা জুডিসিয়ারির বিচারকদের সামনে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ উপস্থাপন করেন।
সেসময় তিনি রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
এই প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের বাস্তবায়নে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় আইনি ও কাঠামোগত সংস্কার, বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দকরণ, অধস্তন আদালতের বিচারকগণের বদলি ও পদায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণসহ বিচার বিভাগে মেধার চর্চার উন্মেষের লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে উন্নত দেশসমূহের ন্যায় সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
এরই অংশ হিসেবে গত ২৭ অক্টোবর বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠান সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তীতে গত ১০ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির তিন জন কর্মকর্তা আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কক্ষে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বিচার বিভাগীয় সচিবালয়ের বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় সম্পর্কে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। বর্তমানে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় তৈরির বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে সক্রিয়ভাবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আশা করা যায়, অচিরেই বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ দৃশ্যমান হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, ছুটি ইত্যাদি বিষয়ে প্রচলিত দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটবে এবং বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এছাড়া, গত ২১ সেপ্টেম্বর ঘোষিত রোডম্যাপের ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করে বিচারপতিদের মতামত নেওয়া হয়। সেই মতামতের আলোকে ২৮ নভেম্বর সেটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।