শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
ঢাকার সাভারে শিক্ষার্থীর স্ট্যাম্পের আঘাতে শিক্ষক উৎপল নিহতের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাভারের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকাল ১০টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন সাভার উপজেলা পরিষদ গেটে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন সাভার-এর আওতাধীন অন্তত ২১টি শিক্ষক সংগঠনের সহস্রাধিক শিক্ষক এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন সাভারের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জিতু সাংবাদিকদের বলেন, "শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষক হত্যার মত এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাক্ষীও আমাদের হতে হচ্ছে। এটি কোনভাবেই কাম্য নয়, আমাদের শিক্ষকরা আজ নিরাপদ বোধ করছেন না।"
তিনি বলেন, "আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই দেরিতে হলেও ঘটনার মূল আসামী জিতুকে গ্রেপ্তার করার জন্য, একইসাথে দাবি জানাই দ্রুত এই মামলার বিচারকার্য শেষ করে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের, পাশাপাশি নিহত শিক্ষকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ অতি দ্রুত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনেরও দাবি জানাই আমরা।"
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে হাজী ইউনুস আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের একটি অন্যতম দাবি হচ্ছে দ্রুত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, যাতে আর কখনো কোন শিক্ষকের উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলা করার সাহস কেউ দেখাতে না পারে, একইসাথে আর কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত কিনা সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি আমাদের।"
এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জানিয়ে শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানান এই শিক্ষক।
এর আগে গতকাল বুধবার পৃথক এলাকা থেকে এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতু (১৬) ও তার বাবা উজ্জ্বল হাজিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
নিহত উৎপল কুমার সরকার (৩৫) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পরলোকগত অজিত সরকারের ছেলে। হামলার পর সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার ঘটনার মূল অভিযুক্ত হাজী ইউনুস আলী স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ঘটনার মূল অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতুকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, "এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জিতুর বাবা উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এছাড়াও মূল অভিযুক্ত জিতুকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে, যদিও তারা জিতুকে এখনো আমাদের থানায় হস্তান্তর করেনি, জিতুকে থানায় হস্তান্তর করার পর আমরা তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবো, এবং আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ঘটনার মূল মোটিভ উদঘাটনের পাশাপাশি আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত ছিলো কিনা সেটি খুজে বের করতে।"