দেউলিয়াত্ব ঘোষণা শ্রীলঙ্কার, অর্থনৈতিক সংকট ২০২৩ সালেও থাকবে
শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া—দেশটির এই নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট অন্তত আগামী বছরের শেষপর্যন্ত চলবে। আজ মঙ্গলবার (৫ জুলাই) পার্লামেন্টকে এমন কথাই জানিয়েছেন লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চরম মূল্যস্ফীতির শিকার শ্রীলঙ্কার ২২ মিলিয়ন জনতা। সরকারের হাতে বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায়, নেই জ্বালানি ও নিত্যপণ্য আমদানির টাকা। ফলে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিত্যসঙ্গী দ্বীপ-দেশবাসীর।
বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টকে যা বলেছেন তার অর্থ দাঁড়ায় এক সময়ের সমৃদ্ধ দেশটি চলতি বছরেই গভীর মন্দা-কবলিত হবে। তার সঙ্গে অব্যাহত থাকবে জ্বালানি, ওষুধ ও নিত্য খাদ্যপণ্যের চরম সংকট।
লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "২০২৩ সালেও আমাদের প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে। এটাই সত্য, এটাই বাস্তবতা।"
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে দেউলিয়াত্ব প্যাকেজের বিশেষ ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে কলম্বো। এনিয়ে চলমান আলোচনার সফলতা শ্রীলঙ্কার দেনা পুনর্গঠনের পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। আগস্ট নাগাদ নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে দাতাগোষ্ঠীটি। অর্থাৎ, আইএমএফ এনিয়ে সন্তুষ্ট হলেই প্যাকেজের ঋণ পাবে শ্রীলঙ্কা। রনিল তার মন্তব্যের মাধ্যমে আলোচনার দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিশ্চয়তার দিকেও আলোকপাত করলেন।
"বর্তমানে আমরা একটি দেউলিয়া দেশ হিসেবে তাদের সাথে আলোচনায় অংশ নিচ্ছি। শ্রীলঙ্কা রাষ্ট্রীয়ভাবে দেউলিয়াত্বের শিকার হওয়ায় আমাদের নেওয়া ঋণের টেকসই ব্যবহার নিয়েও একটি পৃথক পরিকল্পনা আইএমএফের কাছে জমা দিতে হবে। এরপর তারা সন্তুষ্ট হলেই কেবল আমরা ঋণ চুক্তি করতে পারব"- যোগ করেন রনিল।
এর আগে গত সপ্তাহে আইএমএফ জানায়, দ্বীপরাষ্ট্রটির আর্থিক ব্যবস্থাপনা সঠিকপথে আনতে এবং ক্রমবর্ধমান বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় আগে কাজ করতে হবে লঙ্কান সরকারকে। শুধুমাত্র তারপরেই দেশটির ব্যালান্স অব পেমেন্ট সংকট নিরসনে ঋণদানের চুক্তি করা যাবে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে পেট্রোলের মতো নিত্য জ্বালানি প্রায় শূন্যের কোঠায়। জ্বালানি বাঁচাতে একান্ত জরুরি নয় এমন সব জন-পরিষেবা বন্ধ করেছে সরকার।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, খাদ্য সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ জনগণ না খেয়ে থাকছে।
- সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া