মেটা’র চাপে হার্ভার্ডের চাকরি হারানোর অভিযোগ মিসইনফরমেশন বিশেষজ্ঞের
ভুয়া তথ্য (মিসইনফরমেশন) বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এক বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে মার্ক জাকারবার্গের দাতব্য তহবিল থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতির সময় মেটা'র সমালোচনার জেরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়টি চাকরিচ্যুত করেছে।
জোয়ান ডনোভানের অভিযোগ, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি কোনো সহকারী নিয়োগ দিতে পারছিলেন না। তাকে নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়িও করেন হার্ভাডের একদল কর্মী।
ডনোভান দাবি করেছেন, তার বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের সাবেক কর্মী, হুইসেলব্লোয়ার ফ্রান্সেস হুগেন ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নথিপত্র ফাঁস করে দিয়েছেন। তার সেসব নথিপত্র হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা শুরু করেন ডনোভান।
তারই অংশ হিসেবে তিনি মেটার সমালোচনা ও চাকরিচ্যুতি বিষয়ক এ বিতর্কিত অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছেন।
'ওই দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় আমার সঙ্গে ভিন্নভাবে আচরণ করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আমি চাকরি হারাই,' ডনোভান বলেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরে ডনোভানের কর্মস্থল হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ডিন'স কাউন্সিলের এক বৈঠকে ফেসবুক কমিউনিকেশনসের সাবেক প্রধান এলিয়ট শ্রাজ বলেন, ফেসবুককে 'সত্যের বিচারক বিবেচনা করা উচিত নয়'।
এর সপ্তাখানেক পর ডিন ডগলাস এলমেনডরফ ডনোভানকে এক ইমেইলে — '(এ দেশে বা অন্য কোথাও) সত্যের স্বাধীন কোনো বিচারক এবং (কিছু দেশে) বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক নিরাপত্তার কোনো মধ্যস্থতাকারীই যখন নেই' — তখন এমন পরিস্থিতিতে ডনোভান কীভাবে তার মিসইনফরমেশন বিষয়ক গবেষণার ন্যায্যতা প্রমাণ করবেন তা জানতে চান।
ডনোভান জানান, এরপর গত বছর তাকে বলা হয় তার মূল গবেষণা প্রকল্প ধীরে ধীরে ছোট করে আনা হবে। এ বছর স্কুলটি তাকে চাকরিচ্যুত করে।
তবে এক ইমেইলে হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল জানিয়েছে, ডনোভানের হার্ভার্ড ত্যাগ মেটা'র সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।
ইমেইলে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি অনুযায়ী ডনোভানের জন্য কোনো ফ্যাকাল্টি স্পন্সর পাওয়া যায়নি। এছাড়া তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি বলেও দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ডনোভানকে 'খণ্ডকালীন অ্যাডজাংক্ট লেকচারার হিসেবে চাকরি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি সেটা গ্রহণ করেননি', ইমেইলের ওই বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়।
ডনোভানের দাবি অনুযায়ী, হার্ভার্ডের সাবেক শিক্ষার্থী মার্ক জাকারবার্গ ও তার স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কয়েক মিলিয়ন ডলার দান করেছেন এবং তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেম্পনার ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অভ ন্যাচারাল অ্যান্ড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
'নিরপেক্ষভাবে বলতে গেলে, ৫০০ মিলিয়ন ডলার নিশ্চিতভাবেই বড় একটি আর্থিক প্রভাবক,' বলেন ডনোভান।