রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করা বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা পুতিনের
যেসব বিদেশি নাগরিক রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে তারা সপরিবারে রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার এক ডিক্রি জারি করে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ডিক্রিতে বলা হয়েছে, যারা 'বিশেষ সামরিক অভিযান'-এ চুক্তিবদ্ধ ছিলেন, তারা নিজেদের পাশাপাশি স্ত্রী, সন্তান ও বাবা-মায়ের জন্য রুশ পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন। তাদেরকে এমন প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে যেটি দেখলে বোঝা যায় তারা অন্তত এক বছরের জন্য বিভিন্ন অপারেশনে যুক্ত ছিলেন।
রুশ নাগরিকত্ব তাদেরকেই দেওয়া হবে, যারা নিয়মিত সামরিক বাহিনী অথবা অন্যান্য সামরিক দলের সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। এটি ওয়াগনার গ্রুপে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
পুরো বিষয়টির উদ্দেশ্য হলো সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিদেশিদের রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হতে উৎসাহিত করা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে কতজন বিদেশি যুদ্ধ করছেন, সে বিষয়ে মস্কো কোনো তথ্য দেয়নি। রয়টার্সের আগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সামরিক বাহিনীতে কিউবানরা বোনাসের আশায় (গড়ে কিউবান মাসিক বেতনের থেকে ১০০ গুণ বেশি) যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি ওয়াগনার গ্রুপে তিনজন আফ্রিকান যোগ দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে দুজন সরাসরি যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত মাসে রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ৩ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে, যা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার মোট সামরিক বাহিনীর প্রায় ৯০ শতাংশ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়াকে ৩ লাখের মতো অতিরিক্ত লোকবল সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করতে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আবারও নিয়োগ চলতে থাকবে, যেহেতু পুতিনেরই আবার ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ক্রেমলিন বারবার বলেছে, নতুন করে আর কোনো লোক সামরিক বাহিনীতে নেওয়ার দরকার নেই। কারণ হাজার হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় গত বছর রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।
গত ২২ মাস ধরে চলা যুদ্ধে মোট হতাহতের ব্যাপারে রাশিয়া বা ইউক্রেন কোনো দেশই তথ্য প্রকাশ করেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দেশটির সামরিক বাহিনীতে নতুন করে সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ সেনা নিয়োগ করার চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার কিয়েভের পার্লামেন্টে নতুন করে একটি খসড়া আইন করা হয়েছে যেটি সামরিক বাহিনীতে নতুন লোকবল নিয়োগের বিষয়গুলোকে আরও কঠিন ও সম্প্রসারিত করবে।