পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে পশ্চিমকে সতর্ক করল পুতিন, মস্কো পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য সৈন্য পাঠালে তা পারমাণবিক যুদ্ধের উসকানি দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। একইসাথে মস্কোর কাছে পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার মতো অস্ত্র রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে এই রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে মস্কোর সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। পুতিন এর আগে অবশ্য ন্যাটোর সাথে সরাসরি সংঘর্ষের জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। সেক্ষেত্রে আজ (বৃহস্পতিবার) রাশিয়ার পারমাণবিক সতর্কতা ছিল তার বেশ স্পষ্ট বার্তা।
পশ্চিমা দেশগুলোর আইন প্রণেতাদের ও অন্যান্য অভিজাতদের সম্বোধন করে পুতিন অভিযোগ করেন, পশ্চিমারা রাশিয়াকে দুর্বল করতে চায়। সেক্ষেত্রে ৭১ বছর বয়সী এই নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "মস্কোর প্রতি হস্তক্ষেপকে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে; সেটা হয়তো তারা বোঝেন না।"
এর আগে অবশ্য গত সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন ন্যাটো সদস্যদের ইউক্রেনে স্থল সেনা পাঠানোর একটি আহ্বান জানান। যদিও এমন আহ্বানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন এবং অন্যান্যদের দেশগুলো দ্রুত নাকচ করে দিয়েছে।
এ সম্পর্কে পুতিন বলেন, "পশ্চিমা দেশগুলিকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, আমাদের কাছে এমন অস্ত্রও রয়েছে যা তাদের ভূখণ্ডে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার সভ্যতা ধ্বংসের হুমকি দেয়। তারা কি তা বুঝতে পারে না?"
এদিকে আগামী ১৫ থেকে ১৭ মার্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ষষ্ঠ মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন পুতিন। ঠিক তখনই রাশিয়ার ব্যাপক আধুনিকীকৃত পারমাণবিক অস্ত্রাগারের প্রশংসা করলেন তিনি; যা বিশ্বের বৃহত্তম।
পুতিন বলেন, "কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে।" এক্ষেত্রে রুশ প্রেসিডেন্ট নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক পারমাণবিক অস্ত্রের কথা উল্লেখ করেন। তিনি ২০১৮ সালে প্রথম এই অস্ত্রটির কথা বলেছিলেন।
দৃশ্যত ক্ষুব্ধ অবস্থায় পুতিন পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের নাৎসি জার্মানির অ্যাডলফ হিটলার এবং ফ্রান্সের নেপোলিয়ন বোনাপার্টের মতো যারা অতীতে রাশিয়ায় ব্যর্থভাবে আক্রমণ করেছিলেন তাদের ভাগ্য স্মরণ করার পরামর্শ দেন।
পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে পুতিন বলেন, "তারা প্রকৃত যুদ্ধের অর্থ কী তা ভুলে গেছে। কারণ তারা গত তিন দশকে রাশিয়ানদের মতো একই ধরনের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি।"
পুতিন বলেন, "কিন্তু এখন এর পরিণতি অনেক বেশি করুণ হবে। তারা মনে করে এটা (যুদ্ধ) একটা কার্টুন।"
পুতিন জানান, রাশিয়ান বাহিনী এখন ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি জায়গায় অগ্রসর হচ্ছে। ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে রাশিয়াকে অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তার পশ্চিম সীমান্তে মোতায়েন করা সৈন্যদের জোরদার করতে হবে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান