শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবের একটি কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রদেশের স্বরাষ্ট্র বিভাগ শুক্রবার ও শনিবার সব ধরনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
এ সিদ্ধান্ত পাঞ্জাব প্রদেশের প্রায় ২.৬ কোটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। রাওয়ালপিন্ডির পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ খালিদ মাহমুদ হামদানি এএফপিকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের সময় শহরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য ৩৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, "আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে লোকজনকে শনাক্ত করবো।"
লাহোরের পাঞ্জাব কলেজ ফর ওমেন এর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষোভ শুরু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট দেখে একজন নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করলেও এখনও কোনো ভুক্তভোগী সামনে না আসায়, ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এ বিক্ষোভ লাহোরের বিভিন্ন ক্যাম্পাস ও রাওয়ালপিন্ডিতেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। বিভিন্ন শহরে শতাধিক শিক্ষার্থীকে রাস্তা অবরোধ, নিরাপত্তা কর্মীদের আহত করা এবং ভাঙচুরের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিক্ষোভ পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কলেজগুলোতে নারীদের নিরাপত্তা, হয়রানি এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিশ্বাসকেও তুলে ধরছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তে গঠিত তদন্তকারী দল কোনো ধর্ষণের প্রমাণ পায়নি এবং তারা বিক্ষোভের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজের পরিচালক আরিফ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমি যদি ভুল প্রমাণিত হই, তবে পদত্যাগ করবো এবং শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবো।"
প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ বলেছেন, মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
বিক্ষোভের আহ্বান জানানো অন্যতম গোষ্ঠী দ্য প্রোগেসিভ স্টুডেন্টস কালেক্টিভ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠন, ছাত্র প্রতিনিধি এবং বিচারকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।