ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলবেনিয়ায় ১ বছরের জন্য টিকটক নিষিদ্ধ ঘোষণা
আলবেনিয়ায় ছুরিকাঘাতে এক স্কুলছাত্র হত্যার ঘটনার পর শিশুদের ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় সরকার এক বছরের জন্য টিকটক বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। খবর বিবিসির।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামা জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা আলবেনিয়ার সরকারের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জরুরি ব্যাখ্যা চেয়েছে।
তারা বিবিসিকে বলেছে, ১৪ বছর বয়সী নিহত ছাত্র বা অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো টিকটক অ্যাকাউন্ট থাকার প্রমাণ মেলেনি।
তিরানা শহরে শিক্ষকদের, অভিভাবকদের এবং মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে এক বৈঠকে রামা টিকটককে "এলাকার গুন্ডা" বলে অভিহিত করেছেন।
রামা বলেন, "আমরা এক বছরের জন্য এটি বন্ধ করব। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য এবং অভিভাবকদের তাদের সন্তানের পথচলা বুঝতে সাহায্য করার জন্য নানা কার্যক্রম শুরু করব।"
তিরানার দক্ষিণাঞ্চলের এক স্কুলের কাছে সংঘর্ষের জেরে ১৪ বছরের এক শিক্ষার্থী নিহত এবং আরেকজন আহত হওয়ার ঠিক এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে টিকটক বন্ধের সিদ্ধান্ত এসেছে। এই সংঘর্ষের মূল কারণ ছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হওয়া একটি বিরোধ।
এই ঘটনার পর আলবেনিয়ায় অভিভাবক, মনোবিজ্ঞানী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী এদি রামা বলেন, "চীনে টিকটক ছাত্রদের কোর্স করার, প্রকৃতি রক্ষা করার এবং ঐতিহ্য ধরে রাখার মতো বিষয় প্রচার করে। কিন্তু চীনের বাইরে টিকটকে আমরা শুধু বাজে জিনিসই দেখি। আমাদের এটা কেন দরকার?"
টিকটক ইতোমধ্যে তাদের অন্যতম বড় বাজার ভারতে নিষিদ্ধ। ২০২০ সালের জুনে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া ইরান, নেপাল, আফগানিস্তান ও সোমালিয়াতেও টিকটক বন্ধ রয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেস একটি আইন পাস করেছে। নতুন এই আইন অনুযায়ী, আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে যদি টিকটক তার চীনা মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স থেকে আলাদা না হয়, তবে অ্যাপটি নিষিদ্ধ হবে।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ১০ জানুয়ারি একটি শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে, যেখানে টিকটক দেখাবে কেন এটি নিষিদ্ধ বা বিক্রি করা উচিত নয়।
মার্কিন সরকার অ্যাপটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, কারণ তাদের মতে এর সঙ্গে চীনা সরকারের সম্পর্ক রয়েছে। তবে টিকটক এবং বাইটড্যান্স এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের মতো ইউরোপের কয়েকটি দেশ শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের কঠোরতম পদক্ষেপ নিয়ে ১৬ বছরের নিচের শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে।
যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি সচিব পিটার কাইল জানিয়েছেন, ১৬ বছরের নিচের শিশুদের জন্য একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে "আলোচনা চলছে"। তবে তিনি জানান, তিনি আরও প্রমাণ দেখতে চান।