ফিলিস্তিনের প্রতীক: বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় খালিদা জারারকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন-এর (পিএফএলপি) সদস্য খালিদা জারার রোববার রাতে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে রোববার গভীর রাত থেকে সোমবার (২০ জানুয়ারি) ভোরের মধ্যে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর খালিদা জারার রামাল্লায় পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হন বলে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন ক্রনিকল।
জারার দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তিনি ফিলিস্তিনের আইন পরিষদ প্যালেস্টাইনিয়ান লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের (পিএলসি) সদস্য।
রাজনৈতিক জীবনে অনেকবার প্রশাসনিক বন্দিত্ব বরণ করতে হয়েছে জারারকে। কোনো স্পষ্ট অভিযোগ ছাড়াই বারবার তাকে আটকে করা হয়েছে। তার মতো আরও অনেক ফিলিস্তিনি মানবাধিকারকর্মী বিনাবিচারে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আছেন।
ইসরায়েলের সামরিক আদালতের এক বিচারে 'বিদ্রোহ উসকে দেওয়া ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগে জারারকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আন্তর্জাতিক প্রচারণার পর তিনি ছয় মাসের মধ্যেই মুক্তি পান বলে ওয়াতান নিউজ জানিয়েছে।
২০২৩ সালের গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে খালিদা জারার চরম প্রতিকূল পরিবেশে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ছিলেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, তার সেলে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সুবিধাও ছিল না।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, জারারকে একটি ছোট কক্ষে রাখা হয়েছিল। ওই কামরায় বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। সামান্য অক্সিজেন পাওয়ার জন্যও তাকে দরজার কাছাকাছি শুয়ে থাকতে হতো।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও খালিদা জারার ফিলিস্তিনি বন্দিদের অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য কাজ করেছেন।
তিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মানবাধিকার সংস্থা আদ্দামির-এর পরিচালক ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) প্যালেস্টাইনের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছেন খালিদা জারার। তার মুক্তি এই বন্দি বিনিময় চুক্তিকে বিশেষ তাৎপর্য দিয়েছে।