লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদ না থাকায় দেশে চামড়ার দাম কম: বিটিএ
ঈদুল আজহায় সারাদেশের বহু মানুষ পশু কোরবানি দিয়েছেন, তবে কোরবানির পর অনেকেই পশুর চামড়া ফেলে রাখেন রাস্তায়। কারণ, গত কয়েক বছরের মতো এবারও তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে পারেন নি।
এমনকি কয়েকজন ব্যবসায়ীকে বিনামূল্যে চামড়া দেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলেও তারা কোনোভাবেই কাঁচা চামড়া নিতে রাজি হন নি।
এমন পরিস্থিতিতে এ বছর কোরবানির প্রায় ৪০ লাখ ছাগল-ভেড়ার চামড়া নষ্ট হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) অনুমান, এ সংখ্যা ৫-৬ লাখের মতো হবে।
কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দামও মানুষ পায়নি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন আহমেদ বলেন, 'আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের দাম বেশি থাকলেও লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকায় এর সুফল আমরা পাচ্ছি না।'
বুধবার ধানমন্ডি ক্লাবে কোরবানি ঈদের পর সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিটিএ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
শাহীন আহমেদ বলেন, 'একই মানের পণ্য বানিয়েও আমাদের অন্য দেশের চেয়ে অর্ধেক দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। আর এ কারণে বাংলাদেশে কাঁচা চামড়ার দামও কম।'
'১০ বছর আগেও একটি ভালো মানের গরুর চামড়া ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হতো কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে চামড়ার দাম মিলছে না। এবারও গড়ে বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। যদিও চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে, বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে। তবুও চামড়ার দাম না পেয়ে ফেলে রাখা, মাটিতে পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটেছে ২০১৯ সালে।'
বিটিএ চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন আহমেদ বলেন, 'চামড়াজাত পণ্য বা চামড়ার দর বহির্বিশ্বে কমেনি। আমরা যে চামড়া উৎপাদন করছি, সেই চামড়া আমরা ব্র্যান্ড বায়ারদের কাছে বিক্রি করতে পারছি না। আমরা নন-কমপ্লায়েন্স হওয়ার কারণে চায়নিজ বায়ারের কাছে যে পণ্যের দাম ২ ডলার সেটা আমরা ১ ডলারে বিক্রি করছি। তারা আবার বেশি দামে সেটা বিক্রি করছে।'
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের আগে ঢাকার চামড়া আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তখন আমরা ব্র্যান্ড বায়ারদের কাছে আমরা পণ্য বিক্রি করেছি। এসব ব্র্যান্ড বায়ারদের যদি ফিরিয়ে আনতে চাই তাহলে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ দরকার। ৩০ থেকে ৪০টি ট্যানারি এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট পেলে আমাদের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যাবে ১ বছরের মধ্যে। তখন কাঁচা চামড়ার দামও বাড়বে।
লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদ পেতে পরিবেশ নষ্ট না করেই চালাতে হয় কারখানা। যেখানে এখনও পুরোপুরি ব্যর্থ দেশের ট্যানারিগুলো।
মোঃ শাহীন আহমেদ বলেন, '২০১৫ সালে (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেট দেয়া শুরু হয়। আমরা এ সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। তবে এখনও সাভারের ট্যানারি পল্লীকে বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ ছাড়পত্র দেয়নি। এটা একটা বাধা এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট পেতে।'