টি-টোয়েন্টিতে নেই ডমিঙ্গো, এশিয়া কাপে প্রধান কোচবিহীন বাংলাদেশ
দলের প্রধান কোচ তিনি, তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের দেখভালের দায়িত্ব তার। কিন্তু রাসেল ডমিঙ্গোর টি-টোয়েন্টি দর্শনের সঙ্গে দলের না মেলায় ভিন্ন রাস্তা বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টি-টোয়েন্টির টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শ্রীধরন শ্রীরামকে। প্রধান কোচের দায়িত্ব না হলেও আপাতত তার তত্ত্বাবধানেই থাকবে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল। ডমিঙ্গোকে টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিসিবি।
ডমিঙ্গোকে টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় আগামী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে প্রধান কোচ ছাড়াই খেলতে হবে বাংলাদেশ। কেবল এশিয়া কাপই নয়, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি থেকে দূরে থাকবেন ডমিঙ্গো।
শুধু ওয়ানডে ও টেস্ট দল নিয়ে কাজ করবেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই কোচ। এ সময়ে পুরো দলের দায়িত্ব থাকবে ভারতীয় কোচ শ্রীরামের ওপর। যদিও তার ভূমিকা প্রধান কোচের নয়। সোমবার ডমিঙ্গো ও শ্রীরামের সঙ্গে বৈঠকের এ কথা জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ সময় বাংলাদেশ দলে নিজের অবস্থান নিয়ে কথা বলেন ডমিঙ্গোও।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট নিয়ে হতাশার শেষ নেই বাংলাদেশের। সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে সর্বশেষ ১৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ২টিতে জিতেছে তারা। এই ফরম্যাটে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে দল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা বিসিবির। নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। এবার কোচিংয়েও পরিবর্তন আনা হলো।
নাজমুল হাসান বলেন, 'আগে যেটা বলেছি, সেটাই। টি-টোয়েন্টির জন্য টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে আমরা শ্রীধরন শ্রীরামকে নিয়োগ দিয়েছি। শ্রীরাম ও রাসেলের সঙ্গে একটা বসা হলো। ভবিষ্যতে আমরা কী করব না করব, এসব নিয়ে আমাদের ভালো আলোচনা হয়েছে। এফটিপিতে অনেক খেলা। কারও পক্ষে এভাবে সফর করা খুবই কঠিন। রাসেল কী করবে না করবে, দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে সে আমাদের পুরো পরিকল্পনা দেবে।'
'রাসেল ডমিঙ্গো টি-টোয়েন্টিতে নয়। সে ওয়ানডে ও টেস্ট নিয়ে কাজ করবে। টি-টোয়েন্টি আমরা আলাদা করেছি। টি-টোয়েন্টিতে প্রধান কোচ বলে কেউ নেই। আমাদের ব্যাটিং কোচ, স্পিন কোচ, ফাস্ট বোলিং কোচ, ফিল্ডিং কোচ কোচ, অধিনায়ক আছে। তবে আমরা একজন টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট নিয়েছি টি-টোয়েন্টিতে। সে গেম প্ল্যানটা দেবে। এখন যদি সেই গেম প্ল্যান দেয়, তাহলে হেড কোচ কী করবে আর?' যোগ করেন বিসিবি সভাপতি।
এক দলে দুজনকে দয়িত্বে রেখে ঝামেলা তৈরি করতে চায়নি বিসিবি। নাজমুল হাসানের ভাষায়, 'এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি আমাদের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এখন আমরা তাকে পাঠাতে পারতাম টি-টোয়েন্টিতে। তাহলে আপনার কি আপনার মনে হয়, এই যে গেম প্ল্যান করবে ও, স্বাধীনভাবে করতে পারবে কি না! যদি একজন হেড কোচ থাকে তারও তো একটা মতামত থাকে। আমরা তো আলাদাই করতে চাচ্ছি। শুধু শুধু আমরা দলের মধ্যে কোনো দ্বিধা তৈরি করতে চাইনি। টি-টোয়েন্টিতে তাকে পাঠানো হচ্ছে না, বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেই সে। আমরা একদম আলাদা করে দেখতে চাচ্ছি। দেখা যাক কী ঘটে।'
এ ছাড়া জাতীয় দলের দুই ফরম্যাট ছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কাজ করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ডমিঙ্গো। তাকে টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্বে না রাখার এটাও একটা কারণ। বিসিবি সভাপতি বলেন, 'ও আমাদের এনসিএল দেখতে চায়, 'এ' দলের খেলাগুলো দেখতে চায়। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় কারা আছে, ও একটু দেখতে চায়। জাতীয় দলে যারা নাই তাদের নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়। তাদের জন্য আমাদের কি কি সাপোর্ট স্টাফ লাগবে, আমরা এসব নিয়ে আলোচনা করেছি।'