ইলন মাস্কের রেখে যাওয়া স্মৃতিচিহ্ন নিলামে বিক্রি করে দিচ্ছেন তার সাবেক প্রেমিকা!
বিচ্ছেদের পর প্রাক্তন প্রেমিক বা প্রেমিকার দেওয়া বিভিন্ন উপহার ফেলে দিতে চান অনেকেই। হয়তো স্মৃতিকাতরতায় ভুগতে না চাওয়াই এর অন্যতম কারণ! কিন্তু প্রাক্তন যদি হয় বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি, তাহলে হিসাবটা একটু অন্যরকম! এই মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের কলেজ জীবনের প্রেমিকার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। বিচ্ছেদের পরেও মাস্কের দেওয়া উপহার নিলামে তুলে মোটা অংকের টাকা লাভের পায়তারা কষেছেন তিনি!
টেক উদ্যোক্তা ও স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সাবেক প্রেমিকা জেনিফার গোয়েন তাদের সম্পর্কের একাধিক ছবি ও স্মৃতিচিহ্ন নিলামে তুলেছেন। বোস্টনভিত্তিক আরআর অকশন কোম্পানির মাধ্যমে এগুলো নিলামে তু্লেছেন তিনি।
১৯৯৪ সালের দিকে জেনিফার গোয়েনের সাথে সম্পর্ক হয় ইলন মাস্কের। সেসময় তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে আবাসন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন বলে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছে আরআর অকশন। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার অল্প কিছুদিন পরেই মাস্ক স্ট্যানফোর্ডে ডক্টোরাল প্রোগ্রাম শুরু করেন। কিন্তু নিজের প্রথম স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান জিপ-২ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ডক্টোরাল প্রোগ্রাম বাদ দেন তিনি।
নিলামে তোলা বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে রয়েছে ১৮টি ছবি; পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ুয়া তরুণ ইলন মাস্কের শিশুসুলভ চেহারা দেখা যাচ্ছে সেখানে। এছাড়াও, মাস্ক ও জেনিফার গোয়েনের একত্রে বেশকিছু ছবি ও স্মারক রয়েছে।
সফলতার শিখরে ওঠার আগের সেই সময়টায় মাস্কের ছবি দেখে তাকে আর দশটা সাধারণ কলেজ শিক্ষার্থীর মতোই লাগে... ডর্মের ভেতরে যিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বন্ধুবান্ধবের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, প্রেমিকার সাথে আবেগপূর্ণ সময় কাটাচ্ছেন।
নিলামে তোলা জিনিসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম ধরা হয়েছে ইলন মাস্কের সই করা একটি জন্মদিনের কার্ডের। এরপরের দামি বস্তুটি হলো জেনিফার গোয়াইনের জন্মদিনে মাস্কের দেওয়া একটি নেকলেস। জন্মদিনের কার্ডটিতে লেখা- "শুভ জন্মদিন, জেনিফার (ওরফে বু-বু), ভালোবাসায়... ইলন।"
জানা গেছে, রোববার সকাল পর্যন্ত জন্মদিনের কার্ডটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৭০০০ ডলার, যদিও কার্ডটি ১০,০০০ ডলারে বিক্রি হবে বলে নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশা।
অন্যদিকে, জাম্বিয়ার খনি থেকে তোলা পান্নাখচিত সোনার নেকলেসটির আসল মালিক ছিলেন ইলন মাস্কের বাবা ইরল। জেনিফারের ভাষ্যে, "১৯৯৪ সালে ক্রিসমাসের ছুটিতে যখন আমরা দুজনে মিলে টরন্টোতে ইলনের মায়ের সাথে দেখা করতে যাই, তখন ইলন আমাকে 'ভালোবাসা, ভালোবাসা, ভালোবাসা'-লেখা ছোট্ট চিরকুটসহ এই নেকলেসটি আমাকে দেয়।"
জেনিফার আরো বলেন, "ইলন জানিয়েছিল, তার মায়ের এরকম আরো অনেক নেকলেস রয়েছে, যেগুলো দক্ষিণ আফ্রিকায় তার বাবার পান্নার খনি থেকে আনা। ইলন বলেছিল, সে মায়ের বাক্স থেকে একটা নেকলেস আমার জন্য নিয়ে এসেছে। কিন্তু আমি তাকে ক্রিসমাসের উপহার হিসেবে কিছুই দেইনি এবং সেজন্যে আমার খুব অপরাধবোধ হচ্ছিলো। ইলন বলেছিল, আমি যেন এই নেকলেসটা আমার জন্মদিনের অগ্রিম উপহার হিসেবে ধরে নেই। আমি এই নেকলেসটা অনেকবার পরেছি, আবার খুলে রেখেছি। তবে গত ১০ বছর যাবত এটা আমার গয়নার বাক্সেই পড়ে ছিল, আর এটা আমাকে ইলনের কথা মনে করিয়ে দিত।"
নেকলেসের সাথেও রয়েছে দুটি ছবি- একটিতে ইলন মাস্কের মায়ের সাথে ইলন ও জেনিফার। অন্যটিতে ১৯৯৫ সালের বছর শেষের অনুষ্ঠানে মাস্ক ও গোয়েনের ছবি।
বুধবার পর্যন্ত এই নিলামে অংশ নিতে পারবেন আগ্রহীরা, এরপরে নিলাম বন্ধ হয়ে যাবে। টেসলা বা ইলন মাস্কের ভক্তরা যে তাদের প্রিয় ব্যক্তির স্মারক সংগ্রহ করার এই সুযোগ লুফে নেবেন তাতে আর আশ্চর্য কি!
সূত্র: সিএনএন