‘ইমরান খান দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় মিথ্যুক’: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান 'দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যুক'। চলতি বছরের শুরুর দিকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই তিনি 'ভোটারদের গভীরভাবে বিভাজিত করছেন'।
ক্ষমতাগ্রহণের পর পাকিস্তান থেকে দেওয়া প্রথম বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমন সব ঘোরতর অভিযোগ করেছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
৭০ বছরের শাহবাজ পাকিস্তানের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই নওয়াজ শরীফ ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
শাহবাজের অভিযোগ, ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন ইমরান দেশটির অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র সম্পর্কের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন।
এসব বিষয়ে কড়া নিন্দা জানিয়েছেন শাহবাজ।
ইমরান-বিরোধী রাজনীতিবিদ ও পশ্চিমা গণমাধ্যমের অভিযোগ, ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই ইমরান তার কোটি কোটি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে উগ্র বক্তব্য দিয়ে তাদের উস্কে দিচ্ছেন। ছড়াচ্ছেন অযাচিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। ইমরানের দাবি অনুযায়ী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে পশ্চিমা বিশ্বের হাত রয়েছে– এই অভিযোগকেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বলা হচ্ছে।
একইসঙ্গে, শাহবাজের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ ও পাকিস্তানের ঘাড়ে পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেওয়া (আমদানিকৃত) শাসকগোষ্ঠী বলছেন তিনি।
এসব অভিযোগ তুলে আগামী নির্বাচনে জোর লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইমরান। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজধানী ইসলামাবাদে এক লংমার্চের পরিকল্পনাও করছেন।
ইমরান খানের ভাষ্য, পাকিস্তানের আপামর জনতার মধ্যে ভালো সাড়া ফেলেছে। এতে বিপাকেও পড়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী– যাদের সাথে দ্বন্দ্বের কারণেই ইমরানকে মসনদ হারাতে হয়।
অবশ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি সামরিক বাহিনীর সমর্থনেই নির্বাচনে জেতেন বলে অভিযোগ রয়েছে মুসলিম লীগ ও পিপিপি-সহ ইমরান বিরোধীদের।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলের জোর অনুমান, সামরিক নেতৃত্বের সাথে সম্পর্কের অবনতিই তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রধান অনুঘটক।
প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর পর থেকেই তাই সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার বিরুদ্ধেও সমর্থকদের ক্ষেপিয়ে তুলছেন ইমরান।
সামরিক বাহিনীর সাথে শাহবাজ-ও সহযোগিতার সম্পর্ক রেখেছেন ক্ষমতায় আসতে। সাক্ষাৎকার দানকালে তিনি স্বীকার করেন, রাজপথে ইমরানের আন্দোলনের কারণে দেশ শাসনে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি।
যেমন জ্বালানি তেলের কর বাড়ানোর মতো শরীফ সরকারের বেশকিছু সিদ্ধান্ত চরম জন-অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
অথচ আর্থিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের সামনে আইএমএফ থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার উপায়ও নেই।
এনিয়ে শাহবাজ বলেন, 'নিজ দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনোদিন এতটা শঙ্কিত হইনি। সমাজে তিনি সীমাহীন পরিমাণ বিষ ঢেলেছেন, আমাদের জাতি এখনকার মতো বিভাজিত আরও কখনো ছিল না। তিনি সত্যকে বিকৃত করে ঘৃণার পসরা সাজিয়ে বসেছেন'।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান