অনুমোদনের আড়াই বছর পর শুরু চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রামগড় স্থলবন্দর সড়কের কাজ
অনুমোদনের আড়াই বছরের বেশি সময় পর মাঠে গড়াচ্ছে ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও রামগড় স্থলবন্দরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নেয়া বারৈয়ারহাট-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের কাজ।
বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাজধানীর সড়ক ভবন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। এ সময় বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্র বলছে, ২০১৭ সালের এপ্রিলে ভারত সরকারের সঙ্গে সই করা তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের মেমোরেনডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের আওতায় এই প্রকল্পে দেশটি থেকে ৫৯৪.০৭ কোটি টাকা ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। ১,১০,৭.১২ কোটি টাকা ব্যয় ধরে নেয়া প্রকল্পের অবশিষ্ট অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করা হবে।
২০২০ সালের আগস্টে ৮৪৫.৫৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একনেকে অনুমোদনের সময় প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যয় বাড়ে ২৬১.৫৯ কোটি টাকা।
সম্প্রতি ভারতের অশোকা বিল্ডকন-এর সঙ্গে প্রকল্পের মূল প্যাকেজ বাস্তবায়নে ৮০.২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। এর ফলে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার প্রায় আড়াই বছর ও ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার ছয় বছরের বেশি পরে মাঠে গড়াচ্ছে প্রকল্পটির কাজ।
আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দুই দেশের সম্পর্ক সুসংহত রাখার তাগিদ দিয়েছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যেতে পারেন। এর আগেই আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল দেশটিতে সফরে যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ভারতের বিজেপি আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে। জুলাই মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। দলীয় এই সফর দুই দেশের মানুষের 'বন্ধন' আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "পার্টি টু পার্টি কনট্যাক্ট দরকার, পিপল টু পিপল কনট্যাক্টকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য, সেতুবন্ধনের জন্য।"
প্রসঙ্গত, আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সড়ক ও রেল, এ দুই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটি অনেক এগিয়ে গেছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এই ট্রানজিট সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে দুই দেশেরই ভাল হচ্ছে।
নভেম্বরের মধ্যে ভারত থেকে ১০০টি দ্বিতল বৈদ্যুতিক এসি বাস আনার কথা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকল্পটির অনুমোদিত অফিসিয়াল প্রাক্বলিত দরের চেয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৮.৭৬ শতাংশ বেশি দর প্রস্তাব করে। এ কারণে ঠিকাদারের কোটেড রেট অনুযায়ী প্রাক্কলিত দর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এর আওতায় বারৈয়ারহাট থেকে রামগড় পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও রামগড় স্থলবন্দরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ উন্নত, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী যোগাযোগ নিশ্চিত করা যাবে।