তামিমের সহযোগিতায় হাসপাতালে জায়গা হলো বিপ্লবের বাবার
করোনাকালে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এলোমেলো হয়ে পড়েছে। অনেকেই হাসপাতালে গিয়ে সেবা পাচ্ছেন না। গুরুতর অবস্থা হলেও অনেকেই ভর্তি হতে পারছেন না হাসপাতালে। জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের ক্ষেত্রেও এমনই হয়েছে। অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটে বেড়াতে হলো তাকে।
বাবার চিকিৎসার জন্য দুদিনে অন্তত পাঁচটি হাসাপাতালে গিয়েছেন বিপ্লব। কিন্তু কোনো দিশা মিলছিল না। উপায় না দেখে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দ্বারস্থ হন জাতীয় দলের তরুণ এই লেগ স্পিনার। অবেশেষে একটা গতি হয়েছে। তামিমের সহায়তায় বাবা আব্দুল কুদ্দুসকে বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুরের হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করিয়েছেন বিপ্লব।
এ বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিপ্লব বলেন, 'উপায় না দেখে আমি তামিম ভাইকে ফোন দেই। এ ছাড়া আমাদের ম্যানেজার সাব্বির ভাইকে ফোন দেই। তামিম ভাইয়ের সাথে কথা হওয়ার পর উনি আমাকে বললেন, "একটা মিনিট অপেক্ষা কর আমি দেখছি।" তামিম ভাইয়ের পরিচিত ডাক্তার ছিল হার্ট ফাউন্ডেশনে, উনি কথা বলে ভর্তি করার সব ব্যবস্থা করে দেন। এরপর বাবাকে ওখানে ভর্তি করিয়েছি।'
ভর্তির দিনে বাবার অবস্থার উন্নতি না হলেও আপাতত কিছুটা ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন বিপ্লব। গত বছর ঘরের মাঠে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া এই লেগ স্পিনার বলেন, 'এখন মোটামুটি আছেন। দেখে আগের থেকে একটু ভালোই মনে হচ্ছে। ওয়ার্ডেই উনাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আজ সকালে করোনার টেস্ট করানো হয়েছে। রেজাল্ট এলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।'
করোনাভাইরাসের কঠিন এই সময়ে শ্বাসকষ্ট থাকায় কোনো হাসাপাতালে বাবাকে ভর্তি করাতে পারছিলেন না বিপ্লব। কঠিন এই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিপ্লব বলেন, 'বাবার শ্বাসকষ্ট আছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল দুই-তিন ধরে। যখন দেখলাম অবস্থা বেশি খারাপ, তখন আমরা বাবাকে ভর্তির জন্য অনেকগুলো হাসাপাতালে যোগাযোগ করি। সব জায়গা থেকে আগে টেস্ট করাতে বলছিল। টেস্ট করাচ্ছিলাম, কিন্তু রিপোর্ট দেখে ভর্তি নিচ্ছিল না। উনারা বলছিলেন শ্বাসকষ্ট আছে এমন রোগীকে নেবে না। রিপোর্ট দেখে দেখে না করে দিচ্ছিল।'
বিপ্লবের মনে হয়েছিল শ্যামলীতে সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো যাবে। কিন্তু এখানেও পারেননি, 'শ্যামলীতে সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে যাই, ওখান থেকেও একই কথা বলে। ভেবেছিলাম এখানে অন্তত ভর্তি নেবে। কিন্তু এখানে যখন টেস্টগুলো আবার করানো হয়, টেস্টের রিপোর্ট দেখে উনারা বুঝতে পারছিলেন শ্বাসকষ্টের ব্যাপারটা। উনাদের মনে হচ্ছিল হার্টের সমস্যার কারণেই এই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। উনারা আমাদের দ্রুত হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।'
হার্ট ফাউন্ডেশনে এসেও একই অবস্থার সম্মুখীন হন দেশের হয়ে ৭টি টি-টোয়েন্টি খেলা বিপ্লব। এর পরের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করাতে যাই। এখানে ডাক্তারদের সাথে কথা হয়, উনারাও ভর্তি নেবেন না বলে জানাচ্ছিল। সিটের সমস্যা থাকায় নেবে না বলছিল। ততক্ষণে আমার অনেকগুলো হাসাপাতালে ঘোরা হয়ে গেছে। এটাই শেষ ছিল। যখন এখানে একটা অনিশ্চয়তা দেখতে পাই, ভাবছিলাম কী করব। এরপরই তামিম ভাইকে ফোন দেই।'