পশ্চিম তীর দখল থেকে সামান্য পেছাল ইসরাইল
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ছিল একপেশে। ওই পরিকল্পনার আওতায় ইতোমধ্যেই দখলীকৃত ভূমি ছাড়াও পশ্চিমতীরের আরও ৩০ শতাংশ ভূমি দখলের অধিকার দেওয়া হয় ইসরায়েলকে। আজ বুধবার (১ জুলাই) থেকেই এ দখলদারি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল বেঞ্জামিন নেতিনিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। কিন্তু, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, পরিকল্পনাটি বুধবার থেকে কার্যকরের পরিকল্পনা তার সরকারের নেই। এক্ষেত্রে কিছুটা দেরি করা হতে পারে।
ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজি এমন সময় এ বিবৃতি দিয়েছেন, যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতিনিয়াহু দখলের পরিকল্পনা নিয়ে 'আগামী দিনগুলোতে' যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন।
এর ফলে আজ ১ জুলাই থেকে নির্ধারিত দিনে দখল পরিকল্পনা পিছিয়ে গেল।
এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইসরায়েলের প্রতি পশ্চিমতীর দখলের পরিকল্পনা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবার নজিরবিহীন আহ্বান জানান।
ইসরায়েলের একটি প্রভাবশালী জাতীয় দৈনিক 'ইয়েদিত আহরোনতের' প্রথম পাতায় প্রকাশিত কলামে এ আহ্বান জানান দেশটির কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত বরিস জনসন।
এসময় তিনি, দখলের পরিণাম নিয়েও সতর্ক করেন।
সেখানে বরিস জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের সম্মতি ছাড়া ১৯৬৭ সালের পূর্বে নির্ধারিত সীমানার আনুষ্ঠানিক পরিবর্তনকে যুক্তরাজ্য স্বীকৃতি দেবে না।
এই অবস্থায় দখলের তারিখ পেছানোর কথা নিশ্চিত করেন নেতিনিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত কেবিনেট মন্ত্রী অফির আকুনিস। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একটি রেডিও স্টেশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দখলের বিস্তারিত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান রয়েছে। তবে চলতি জুলাইয়ের শেষ দিকেই পশ্চিমতীর দখলের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দেন আকুনিস।
'মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করার বিষয়টি আমরা অগ্রাহ্য করতে পারিনা' উল্লেখ করেনি তিনি।
তবে খুব সম্ভব আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার সময়ে ইসরায়েল এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অসম্মতি নিয়েই বেশি দ্বিধাগ্রস্ত।
জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়াকে 'একপেশে' বলে বাতিল করে দিয়েছে। ভূমি দখলে নেওয়ার মাধ্যমে আরেকটি রাষ্ট্রের অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে অধিগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক আইনকে আরও একবার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাবে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটি।
ইইউ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের ভূমি দখল করা হলে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। আর ইউরোপীয় জোটটির সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক থাকার কারণেই এনিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না ইসরায়েল।