ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং মেসেঞ্জার বন্ধ থাকায় দুই ঘণ্টায় মেটার ক্ষতি ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং মেসেঞ্জার বন্ধ থাকায় মেটা একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
নিউইয়র্কের ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যান আইভস ডেইলিমেইল ডটকমকে জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধ হওয়ার কারণে মার্ক জুকারবার্গ মঙ্গলবার সকালে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাজস্ব হারিয়েছেন।
মেটার শেয়ারের দামও ১.৫ শতাংশ কমেছে যখন সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ব্যবহারকারীরা রিপোর্ট করা শুরু করে। তারপর থেকে শেয়ারের দাম ১.৬ শতাংশ কমেছে।
মেটার আয়ের সিংহভাগ আসে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যেগুলো ব্যবহারকারীদের দেখানো হয়। তাই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেটার আয়ে প্রভাব পড়েছে।
আইভস ডেইলিমেইল ডটকমকে বলেছেন, "এটি মেটার মোট রাজস্বের একটি নগণ্য পরিমাণ যা সম্ভবত ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে।"
মেটা যান্ত্রিক ত্রুটিকে এই বিভ্রাটের জন্য দায়ী করলেও আসলে কি ঘটেছিল তা এখনো অজানা।
ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র ডেইলিমেইল ডটকমকে জানিয়েছে, কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলো ডাউন ছিল যার কারণে এই সমস্যা হতে পারে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া নয়টার পর থেকে মেটার ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডসে ব্যবহারকারীরা প্রবেশ করতে পারছিলেন না। অনেক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ-আউট হয়ে গিয়েছিল। লগ-ইন উইন্ডোতে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড প্রবেশ করালেও 'ভুল পাসওয়ার্ড' বার্তা দেখানো হচ্ছিল।
বেশিরভাগ ব্যবহারকারী 'ইস্যু রিপোর্ট' এর মাধ্যমে অ্যাপগুলোর সমস্যার কথা মেটাকে জানিয়েছেন। ফেসবুকের জন্য ৭২ শতাংশ, ইনস্টাগ্রামের জন্য ৬৪ শতাংশ এবং মেসেঞ্জারের জন্য ৫০ শতাংশ রিপোর্ট এসেছে ব্যবহারকারীদের থেকে।
যারা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাদের অনেকেই প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন যে তাদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম ডাউন হওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ৮০ হাজারেরও বেশি পোস্ট করা হয়েছিল।
ইলন মাস্ক এক্সে একটি পোস্টের মাধ্যমে মেটার বিভ্রাট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "আপনি যদি এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে এর মানে হল আমাদের সার্ভারগুলো কাজ করছে।"
ডেইলিমেইল ডটকম জানিয়েছে, টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন যেটি লগইন করার জন্য ব্যবহারকারীর ফোনে কোড সহ একটি এসএমএস বার্তা পাঠায় সেটি কাজ করছিল না।
ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা এটিকে অভ্যন্তরীণ সমস্যা বললেও ব্যবহারকারীরা এক্সে বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
কেউ কেউ বলেছেন, এটি একটি 'সাইবার অ্যাটাক' ছিল কারণ এটি সুপার টুইসডের দিন ঘটছে। ওইদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারি ব্যালট অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ইএসইটির প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক মুর বলেছেন, সাইবার আক্রমণের সম্ভাবনা কম কিন্তু এটি অসম্ভবও নয়।
তিনি মেলঅনলাইনকে বলেছেন, "ফেসবুকের 'ডাউন' হওয়ার ইতিহাস থাকলেও এটি অন্যান্য সমস্যার জন্যও হতে পারে।"
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়